স্পোর্টস: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কারণে আগামী বছরের পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) একটু পিছিয়ে নিতেই হতো। তবে সম্ভাব্য সেই নতুন সময়টাকেই স্থায়ী হিসেবে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এছাড়াও আরও কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। টুর্নামেন্টের ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) বৈঠকে এসব প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়। এই মাসের শেষে পিএসএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভার আগে শনিবার একটি প্রাক-সভায় এসব নিয়ে আলোচনা হয়। মাসের শেষ দিকের সভায় এসব চ‚ড়ান্ত হয়ে যাবে বলে আশা করছে পাকিস্তানের বোর্ড। সূচির পরিবর্তনের প্রস্তাবই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সম্ভাব্য পরিবর্তন। এমনিতে জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি বা ফেব্রæয়ারি-মার্চে হয়ে থাকে পিএসএল। তবে আগামী ফেব্রয়ারিতে আট দলের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসবে পাকিস্তানেই। পিসিবি তাই প্রাথমিকভাবে ঠিক করেছে, আগামী পিএসএল হবে ৭ এপ্রিল থেকে ২০ মে। এই এপ্রিল-মে সময়টাকেই ভবিষ্যতের স্থায়ী করে ফেলতে চায় পিসিবি। সেক্ষেত্রে তা সরাসরি সাংঘর্ষিক হবে আইপিএলের সঙ্গে। পিসিবি যদিও মেনে নিচ্ছে, আইপিএলের সঙ্গে ‘প্রতিদ্ব›িদ্বতা’ করার অবস্থায় তারা নেই, তবে ‘সহাবস্থান’ করতে চায়। এই সময়টাকে বেছে নেওয়ার পেছনে পিসিবির বেশ কিছু যুক্তি আছে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি সময়টায় বিগ ব্যাশ, এসএ টোয়েন্টি, বিপিএল, আবু ধাবি টি-টেন লিগ ও আইএল টি-টোয়েন্টিও আয়োজিত হয়। ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়া তাই কঠিন হয়ে ওঠে। ঠাসা এই সময়টা থেকে পিএসএলকে বের করতে চায় পিসিবি। আগামী কয়েক বছর ফেব্রæয়ারি-মার্চে রমজান মাসও পড়ে যাবে। রমজান মাসের কারণে খেলার সময় যেমন বদলাতে হয়, তেমনি মাঠে দর্শক উপস্থিতিও খাকে কম। এ ছাড়া স্পন্সরশিপ ও বিজ্ঞাপন থেকে আয়ও কম হয় রমজান মাসে। ২০২৬ আসর থেকে দুটি দল বাড়ার কথা পিএসএলে। সেক্ষেত্রে আরও বেশি ফাঁকা সময় লাগবে। আইপিএলের সময়টাতে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয় না বললেই চলে। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আইপিএলে সুযোগও দেওয়া হয় না। এপ্রিল-মে মাসে পাকিস্তানের তীব্র গরম নিয়েও অবশ্য আলোচনা হয়েছে। তবে এই সময়ে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়মিতই হয়। তাই এটিকে বড় সমস্যা হিসেবে ধরা হয়নি। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর খবর অনুযায়ী, দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি এই সময়টায় টুর্নামেন্ট আয়োজনের পক্ষে আছে। বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কোনোটি বিপক্ষে, কোনোটি এখনও চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতার জন্য আইপিএলের নিলামের পর পিএসএলের ড্রাফট আয়োজনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। জশ হেইজেলউড, জেসন হোল্ডার, আদিল রশিদের মতো ক্রিকেটারদের কথা বলা হয়েছে, যারা এবার আইপিএলের নিলামে দল পাননি। এমন ক্রিকেটারদের পিএসএলে আনা সম্ভব হবে, যদি ড্রাফট আইপিএলের নিলামের পরে হয়। বিদেশি তারকা আকর্ষণের ক্ষেত্রে আরেকটি প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে বেঁধে দেওয়া পারিশ্রমিকের বাইরে বাড়তি অর্থ দেওয়া হতে পারে একজন ‘মার্কি’ ক্রিকেটার দলে নেওয়ার জন্য, যার পারিশ্রমিক হতে পারে ৩ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি। এখন পিএসএলে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ক্রিকেটার পান ২ লাখ ২০ হাজার ডলারের মতো। এবারের পিসএলে তারকা বিদেশি ক্রিকেটার কম ছিল বলে আলোচনা হয়েছে অনেক। যদিও টিভি স¤প্রচারে তা প্রভাব ফেলেনি বলেই তাবি পিসিবির। তাদের মতে, টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টিভি দর্শক ছিল এবারই। দেশের বাইরে টুর্নামেন্টের আবেদন ছড়িয়ে দিতে প্লে অফ ম্যাচগুলি বিদেশে আয়োজনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে ভাবা হয়েছে ইংল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অস্ট্রেলিয়াকে। এপ্রিল-মে মাসে টুর্নামেন্ট হলে ইংল্যান্ডকেই সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করা হচ্ছে। ভেন্যু হিসেবে এজবাস্টন, ওভাল ও ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের নামও আলোচনায় এসেছে। এই মাসের শেষে পিএসএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভায় সবকিছুর আরও পরিষ্কার চিত্র মিলতে পারে।
https://www.kaabait.com