
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের গণসৌচাগার ইজারা দেওয়ার দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পরও হঠাৎ করে তা স্থগিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। মধ্যরাতে জারি করা এই স্থগিতাদেশে কারণ উল্লেখ না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিয়ে।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র বাক্স খোলা, যাচাই-বাছাইসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর হঠাৎ স্থগিতাদেশ দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। তাদের দাবি, নির্দিষ্ট কোনো পক্ষকে সুবিধা দিতে কর্তৃপক্ষ প্রভাব খাটিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে তারা রেলওয়ে কর্মকর্তাদের “দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ফসল” হিসেবে দেখছেন।
সূত্র জানায়, স্থগিতাদেশ সংক্রান্ত নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুর রহিম। চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছেও পাঠানো হয়েছে। তবে নোটিশে স্থগিতাদেশের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. তানভীরুল ইসলাম বলেন, “যিনি দরপত্র কার্যক্রম স্থগিত করেছেন, বিষয়টি তার কাছেই জানতে হবে।”
পরে বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দরপত্র খোলার পর কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই প্রক্রিয়া স্থগিত করা ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮’-এর স্বচ্ছতা নীতির পরিপন্থী।
রেলওয়ের অভ্যন্তরীণ কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, রেলের ইজারা ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব ও স্বজনপ্রীতি চলে আসছে। এবারও একই কৌশলে সুবিধাভোগী পক্ষকে সুযোগ দিতে প্রক্রিয়াটি স্থগিত করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
তারা আরও জানান, রেলওয়ের মহাপরিচালক, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেখানে প্রতিষ্ঠানটির সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন, সেখানে বিভাগীয় পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার কারণে পুরো সংস্থার সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
রেল সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক দায়সারা মনোভাব এবং বিভাগীয় পর্যায়ে কার্যকর জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই আব্দুর রহিমের মতো কর্মকর্তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন খাত হিসেবে রেলওয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় এই ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল।