সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় করা এই মামলায় তাকে আদালতে হাজির করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আনিস আলমগীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বিকেলে তাকে আদালতে তোলার কথা রয়েছে।
উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার শাহরিয়ার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, “মামলা হয়েছে। আনিস আলমগীরকে আমরা গ্রেপ্তার দেখিয়েছি।”
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ বলেন, “সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। এই মামলায় আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্যদের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।”
পুলিশ জানায়, রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ধানমন্ডি-২ নম্বরে অবস্থিত একটি জিম থেকে বের হওয়ার পর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ওই জিমের ম্যানেজার আরেফিন গণমাধ্যমকে জানান, আনিস আলমগীর সন্ধ্যায় জিমে এসে ব্যায়াম শেষে রাত ৮টার দিকে বের হন।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, মধ্যরাতে ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আনিস আলমগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগকেই পরে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
মামলায় আনিস আলমগীর ছাড়াও আসামি করা হয়েছে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ফ্যাশন মডেল মারিয়া কিসপট্টা এবং উপস্থাপক ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজকে। পুলিশ জানায়, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক মুনিরুজ্জামান সোমবার আদালতে আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে এই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে প্রসিকিউশন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা করেছেন এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দিয়েছেন। এসব কার্যক্রম সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে বলে মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়।
আনিস আলমগীর দৈনিক আজকের কাগজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। সমসাময়িক রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে টেলিভিশন টকশো এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বক্তব্য নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনা ও সমালোচনা চলছিল।