আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালে পাকিস্তানের গোলাগুলিতে আহত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আরেক সদস্য মারা গেছেন। নিহত জওয়ান দীপক চিংগাখাম (বা চিমনগাখাম), বয়স ২৫, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বাসিন্দা। শনিবার রাতে পাকিস্তানের ছোড়া গোলায় আহত হওয়ার পর তিনি গত রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এর আগেই একই ঘটনায় আহত সাব-ইনস্পেক্টর মোহাম্মদ ইমতিয়াজ (বিহার) শহীদ হন। সীমান্তে চলমান উত্তেজনার মধ্যে দীপকের মৃত্যু ভারতীয় বাহিনীতে আরও শোক ও ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
গত ১০ মে রাতে জম্মুর আরএস পুরা সেক্টরের আন্তর্জাতিক সীমান্তে পাকিস্তান থেকে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু হয়। ওই হামলায় অন্তত আটজন বিএসএফ সদস্য আহত হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কনস্টেবল দীপক এবং সাব-ইনস্পেক্টর ইমতিয়াজ। হাসপাতালে নেওয়ার পরও তাঁদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএসএফ এক বিবৃতিতে জানায়, “দেশের সেবায় বীরত্বপূর্ণ আত্মত্যাগকারী কনস্টেবল দীপক চিংগাখামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর চূড়ান্ত আত্মত্যাগকে আমরা স্মরণ রাখব।” দীপকের মরদেহ জম্মুর পালৌরায় বিএসএফ ফ্রন্টিয়ার সদর দপ্তরে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।
মণিপুরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং দীপকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “তিনি আমাদের রাজ্যের গর্বিত সন্তান। একজন মেইতেই হিসেবে দীপকের সাহস ও দেশপ্রেম আমাদের সমাজের অনুপ্রেরণা।”
অন্যদিকে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিএসএফ সাব-ইনস্পেক্টর মোহাম্মদ ইমতিয়াজের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাঁর পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
ভারতের পক্ষ থেকে ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু হয়, যা মূলত সীমান্তে পাকিস্তানি হামলার জবাব হিসেবে নেওয়া হয়। এই অভিযানের পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে যায়। পাকিস্তান দিক থেকে চালানো গোলাবর্ষণে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ৭ সদস্য নিহত হয়েছেন।
‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং চলমান সীমান্ত উত্তেজনা পরিণত হতে পারে আরও বড় সংঘাতে, এমন শঙ্কা এখন দুই দেশের সুরক্ষা বিশ্লেষকদের মাঝে। মৃত জওয়ানদের আত্মত্যাগ যেমন জাতীয়তাবাদী আবেগকে উসকে দিচ্ছে, তেমনি উভয় দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষারও এখন বড় পরীক্ষা।
https://www.kaabait.com