সর্বশেষ :
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

আফগানিস্তানে দাবা খেলা নিষিদ্ধ

প্রতিনিধি: / ১০০ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে আবারও এক নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল তালেবান সরকার। এবার তাদের কড়াকড়ির শিকার হলো বহু শতাব্দীর পুরোনো ও বিশ্বজুড়ে সমাদৃত একটি খেলা-দাবা। তালেবান সরকারের মতে, ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী দাবা খেলা ‘জুয়ার একটি মাধ্যম’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ফলে ধর্মীয় ও সামাজিক অনিশ্চয়তা দূর না হওয়া পর্যন্ত এই খেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ থাকবে।
গত রোববার ক্রীড়া অধিদপ্তরের মুখপাত্র আতাল মাশওয়ানি আনুষ্ঠানিকভাবে বলেন, “দাবা নিয়ে কিছু ধর্মীয় ইস্যু রয়েছে। শরিয়ার আলোকে এগুলো পর্যালোচনার আগ পর্যন্ত খেলার অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না।”
এই ঘোষণার পরপরই আফগান সমাজে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কাবুলের এক জনপ্রিয় ক্যাফে মালিক আজিজুল্লাহ গুলজাদা বলেন, “আমি কয়েক বছর ধরে এখানে অনানুষ্ঠানিক দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছিলাম। তরুণেরা এখানে এসে দাবা খেলত, চা খেত এবং আড্ডা দিত। এখন তাদের জন্য বিনোদনের ক্ষেত্র আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে। আমার ব্যবসারও ক্ষতি হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “অন্যান্য মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেও দাবা খেলা হয়। তাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়ও রয়েছে। তাহলে আফগানিস্তানে এটি নিষিদ্ধ কেন?
তালেবান ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ইসলামি শরিয়াভিত্তিক কড়াকড়ি আরোপ করে চলেছে। এর আওতায় নারীদের জন্য খেলাধুলায় অংশগ্রহণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে মিঙ্ড মার্শাল আর্টস (এমএমএ) এর মতো সহিংস খেলা, যেটিকে শরিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
তালেবানের এসব নিষেধাজ্ঞার ফলে আফগান তরুণদের জীবনধারায় বিনোদন, সংস্কৃতি ও খেলাধুলার পরিসর ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে পড়ছে। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে তালেবান সরকারের মানবাধিকার ও সামাজিক স্বাধীনতা বিষয়ক অবস্থান নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, তালেবান কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র একটি খেলার বিরুদ্ধে নয়; বরং এটি আফগান জনগণের সামাজিক স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তার ক্ষেত্রেও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার নামে যেভাবে ধারাবাহিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে, তা দেশটির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।


এই বিভাগের আরো খবর