স্পোর্টস: ২০২৬ বিশ্বকাপের গ্রুপ ড্র হয়ে গেছে। আর সেই ড্র-ই তৈরি করেছে বছরের সবচেয়ে আলোচিত ফুটবল লড়াইয়ের রসদ। আই গ্রুপে পড়েছে ফ্রান্স, নরওয়ে, সেনেগাল এবং ফিফা প্লে অফ দুই জয়ী দল। ফরাসিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে নরওয়ে, আর সে কারণেই পুরো বিশ্বকাপজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এমবাপ্পে ও হালান্ডের সম্ভাব্য মুখোমুখি লড়াই।
ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। ৪৮ দল নিয়ে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের এ নতুন কাঠামোয় চ্যালেঞ্জ তুলনামূলক কম হলেও ফ্রান্সের জন্য পরিস্থিতি ভিন্ন। সেনেগালের মতো শক্তিশালী দল আর হালান্ডকে ঘিরে নতুন করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে নরওয়ে, ফলে গ্রুপটিকে অনেকেই ‘মৃত্যুকূপ’ বলছেন।
ফ্রান্সের স্মৃতি আবারও ফিরে আসছে ২০০২ বিশ্বকাপের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়েও সেই আসরে সেনেগালের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ফরাসিদের। এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও সে স্মৃতি এখনো তাড়া করে। ২০২২ বিশ্বকাপেও সেনেগাল দেখিয়েছে নিজেদের ধার। ফলে আই গ্রুপে এই দলটিকেও হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই।
সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা তৈরি করেছে দুই গোলমেশিনের দ্বৈরথ। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা এমবাপ্পে এবং ইংলিশ লিগে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো হলান্ড দুজনেই ইউরোপিয়ান ফুটবলের শীর্ষ গোলদাতা তালিকার শীর্ষে। চলতি মৌসুমে ক্লাব ও জাতীয় দলে এমবাপ্পে করেছেন ৩০ গোল, হলান্ডের গোল ৩৩। তাই বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট দৌড়েও তারা থাকবে এগিয়ে।
ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম ড্র শেষে বলেছেন, এমবাপ্পে ও হালান্ডকে ঘিরে ম্যাচ হবে জমজমাট। তাঁর ভাষায়, “দারুণ একটি দ্বন্দ্ব হবে। দুজনেই বিশ্বজোড়া পরিচিত খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়েও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে।” তবে তিনি এও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরই আলাদা। তাই ২০০২ সালের স্মৃতি টেনে এনে তিনি খুব বেশি আলোচনায় যেতে চাননি।
গ্রুপের প্রতিটি ম্যাচই ফ্রান্সের জন্য কঠিন যাচাই-বাছাইয়ের। শীর্ষে থেকে শেষ ৩২-এ উঠলে তাদের সামনে অপেক্ষা করছে আরও বড় লড়াই। শেষ ষোলোয় জার্মানির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও দেশম আপাতত এসব ভাবতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, “মাটিতে পা রেখে পর্বতের চূড়ায় ওঠার পথ তৈরি করতে হবে। প্রথম ধাপগুলোই সবচেয়ে কঠিন।”
২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র তাই শুধু দলীয় হিসাব-নিকাশ নয়, ফুটবল বিশ্বের অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘ করল। কারণ ফ্রান্স বনাম নরওয়ে ম্যাচ মানেই এমবাপ্পে বনাম হালান্ড। আর এ লড়াই হয়তো গ্রুপ পর্বেই তৈরি করবে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় রোমাঞ্চ।