স্পোর্টস: ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রায় নিশ্চিত হার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ড্র তুলে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫৩১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিন বিকেলে ৭২ রানে ৪ উইকেট হারানো দল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি ও লোয়ার অর্ডারের অনমনীয় লড়াইয়ে ম্যাচ বাঁচিয়ে তোলে। জাস্টিন গ্রেভস ২০২ রানে আর কেমার রোচ ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে নিউজিল্যান্ডের বোলিং আক্রমণকে শেষ দিনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ করে দেন।
প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৭ রানে অলআউট হওয়ায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল কিউইদের হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করলে টম ল্যাথামের দলের সামনে কেবলই আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে দুটি প্রধান পেসার ন্যাথান স্মিথ ও ম্যাট হেনরি ইনজুরিতে থাকলেও বাকি বোলারদের সামর্থ্যে আস্থা ছিল স্বাগতিক শিবিরে।
তবে পরিস্থিতির মোড় ঘুরে যায় হোপ ও গ্রেভসের দুর্দান্ত জুটিতে। চতুর্থ দিনে তারা তুলে নেন ১৯৬ রানের লড়াকু পার্টনারশিপ, যা ক্যারিবিয়ানদের ম্যাচে ফেরায়। পঞ্চম দিনে প্রথম ঘণ্টা দৃঢ়ভাবে কাটানোর পর হোপ ১৪০ রানে আউট হলে নিউজিল্যান্ডের আশায় হাওয়া লাগে। কিন্তু সেটিই ছিল তাদের শেষ সাফল্য। এরপর ইমলাক দ্রুত ফিরলেও গ্রেভস আর রোচকে ভাঙতে পারেনি কেউ।
গ্রেভস একদিকে ধৈর্য ধরে নিজের ইনিংসকে এগিয়ে নিতে থাকেন, অন্যদিকে রোচ ব্যাট হাতে দেখিয়ে দেন লোয়ার অর্ডারের লড়াই কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পঞ্চাশ ছুঁয়ে তিনি গ্রেভসকে নিয়ে গড়েন চতুর্থ ইনিংসে ১৮০ রানের অটুট জুটি। আটটি চার মেরে ২৩৩ বল খেলা রোচ শেষ দিকে প্রায় প্রতিটি বল ঠেকিয়ে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের আরও হতাশ করেন।
ক্রিকইনফো জানিয়েছে, চতুর্থ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ৪৫৭ রানের ইনিংস টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে একমাত্র ১৯৩৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ৬৫৪ রান এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। চতুর্থ ইনিংসে গ্রেভসের ডাবল সেঞ্চুরি টেস্ট ইতিহাসে সপ্তম এমন কীর্তি। এই সাতজনের মধ্যে চারজনই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার।
নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে জ্যাকব ডাফি তিন উইকেট নিলেও শেষ দিন তাদের হতাশায় ডুবিয়েছে ব্যর্থ রিভিউ ব্যবস্থাপনা। আগের তিনটি রিভিউ নষ্ট করায় প্রয়োজনের সময় আর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ আনার ছিল না টম ল্যাথামের দলের। ৫৫ ওভার বল করেও মাইকেল ব্রেসওয়েল পেয়েছেন মাত্র একটি উইকেট, রাচিন রাভিন্দ্রা ছিলেন উইকেটশূন্য।
ম্যাচ শেষে ড্র মেনে নেন দুই অধিনায়ক। ক্যারিবিয়ানদের জন্য এটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম পয়েন্ট, অন্যদিকে স্বাগতিকদের হতাশা লেগেই থাকে এমন এক ম্যাচে যেখানে আঙুলের ডগায় থাকা জয়ের স্বাদ হারিয়ে যায় এক জুটির অবিশ্বাস্য প্রতিরোধে।
পরবর্তী টেস্ট শুরু হবে বুধবার, ওয়েলিংটনে।