চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করা বাংলাদেশি হাজিরা তাদের হজ প্যাকেজ বাবদ নির্ধারিত ব্যয় থেকে উদ্বৃত্ত অর্থ ফেরত পাচ্ছেন। রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, মোট ৪ হাজার ৯৭৮ জন হাজিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে ৮ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ১৮৩ টাকা।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, চলতি বছর হজ ব্যবস্থাপনায় বাড়ি ভাড়া ও কিছু ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ পূর্ব পরিকল্পনার তুলনায় কম খরচ হওয়ায় এই উদ্বৃত্ত অর্থের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, “সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করা প্রত্যেক হাজিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব অনুসারে তাদের প্রাপ্য টাকা ফেরত পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে আমরা পুরো হিসাব চূড়ান্ত করেছি।”
সরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা হজ করেছেন, তারা দুই ধরনের প্যাকেজে অংশ নেন। উভয় প্যাকেজ অনুযায়ী বিভিন্ন বাড়িতে অবস্থান করা হাজিদের ফেরত পাওয়ার অংকও ভিন্ন। কেউ ফেরত পাচ্ছেন ৫ হাজার ৩১৫ টাকা, কেউ পাচ্ছেন ২৪ হাজার ২৬২ টাকা, আবার শর্ট প্যাকেজে থাকা হাজিরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৫৩ হাজার ৬৪২ টাকা পর্যন্ত। পুরো টাকা দ্রুতই প্রত্যেক হাজির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১৫৭ জন মুসল্লি হজে অংশ নেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করেন ৫ হাজার ৪১৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ৮১ হাজার ৬৮৭ জন। পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন, হজযাত্রা শুরু হয় ২৯ এপ্রিল এবং শেষ ফ্লাইটটি সৌদি আরবের উদ্দেশে ছাড়ে ৩১ মে। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হয়েছে ১০ জুলাই। হজ কার্যক্রম চলাকালে সৌদি আরবে ৪৫ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী মৃত্যুবরণ করেন, যাদের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ ও ১১ জন নারী।
সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা আরও জানান, হজ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকারের সাশ্রয়ী ও কার্যকর উদ্যোগ এবার সফলতা পেয়েছে এবং আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “২০২৬ সালের হজ ব্যবস্থাপনার কাজ এখন থেকেই শুরু করা হয়েছে। খরচ আরও কমানো এবং হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা আরও মসৃণ ও সম্মানজনক করার জন্য কাজ চলছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “হজ প্রক্রিয়ায় ধর্ম মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবসা করে না; এটি একটি ইবাদত। আমাদের উদ্দেশ্য হলো হাজিদের জন্য সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা। গণমাধ্যম ও হজ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এবার হজ কার্যক্রম ছিল নিরবচ্ছিন্ন, কোনো ফ্লাইট বিপর্যয় ঘটেনি।”
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগকে আগামী বছর আরও উন্নত করার লক্ষ্যে নভেম্বর মাসেই সৌদি আরবের সঙ্গে ২০২৬ সালের হজচুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে বলে উপদেষ্টা জানান।