দীর্ঘ সতেরো বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক কার্যত যানশূন্য হয়ে পড়ে। উৎসবমুখর পরিবেশের মাঝেই গণপরিবহন সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। অনেককে লাগেজ হাতে বা মাথায় নিয়ে হেঁটে গন্তব্যের পথে রওনা হতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে তেজগাঁও থেকে মহাখালী, বনানী, কুর্মিটোলা, কুড়িল ও খিলক্ষেত হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি মোড়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অবস্থান। বাস ও অন্যান্য গণপরিবহন না থাকায় পথচারীরা বাধ্য হয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে পার হচ্ছেন। কেউ কেউ মোটরসাইকেল বা সিএনজি ভাড়া করে এগোতে চাইলেও এসব যানবাহনের সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত।
যানবাহনের অভাবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন দূরপাল্লা থেকে আসা যাত্রীরা। প্রবাসীসহ অনেককে ভারী লাগেজ নিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। ছোট শিশু ও পরিবার নিয়ে যাত্রা করা মানুষদের দুর্ভোগ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিমানবন্দর মোড়ে কথা হয় ময়মনসিংহ থেকে আসা যাত্রী সিনথিয়া রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “ময়মনসিংহ থেকে ট্রেনে এলাম। নেমে দেখি মহাখালী যাওয়ার কোনো বাস নেই। ট্রেনেও প্রচণ্ড ভিড় ছিল। ভাবিনি পরিস্থিতি এতটা কঠিন হবে।”
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানান নরসিংদীগামী যাত্রী ফিরোজ। মাথায় মালামাল নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তিনি বলেন, “বিমানবন্দরের সামনে দেখি সব বাসই রিজার্ভ করা। বাধ্য হয়ে হেঁটেই সামনে যাচ্ছি। ভোগান্তি তো হচ্ছেই, না হলে এভাবে মালামাল নিয়ে হাঁটতে হতো না।”
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় তৈরি করা হয়েছে বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চ। ৪৮ বাই ৩৬ ফুটের এই মঞ্চ নির্মাণে রোববার থেকে দিনরাত কাজ করেছেন শ্রমিকরা। সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন প্রস্তুতির কাজ। বিপুল জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও অভ্যর্থনা কমিটির সদস্যসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে তারা আশা করছেন। তিনি বলেন, “এই এলাকা মানুষের মহামিলন ও মহামেলায় পরিণত হবে।”
সূত্র অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। সেখান থেকে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের সংবর্ধনা মঞ্চে যাবেন। নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস আর সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ মিলিয়ে পুরো বিমানবন্দর সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে ভিন্ন এক চিত্র।