বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ঢাকায় পা রাখলেন তারেক রহমান

প্রতিনিধি: / ০ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর দেশের মাটিতে ফিরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সপরিবারে তাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর মধ্য দিয়ে বহুদিনের প্রতীক্ষিত এক প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী হলো দেশ।

এর আগে একই দিন সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজে পরিচালিত ফ্লাইট বিজি-২০২ এর রুট ছিল লন্ডন হিথ্রো, সিলেট, ঢাকা।

বিমান সূত্র জানায়, উচ্চপর্যায়ের যাত্রী থাকায় ফ্লাইট পরিচালনায় বিশেষ সমন্বয় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। উড়োজাহাজে তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ছিল এ-ওয়ান আসন। সিলেটে বিমান অবতরণ করলেও তিনি সেখানে নামেননি। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ সময় সাধারণ যাত্রী ও দর্শনার্থীদের প্রবেশ সীমিত রাখা হয় এবং দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় না করার অনুরোধ জানানো হয়।

এর আগে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় তখন বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৩৬ মিনিট। দেশের আকাশসীমায় প্রবেশের পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন তিনি। সেখানে লেখেন, “দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে।”

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের সঙ্গে একই ফ্লাইটে ছিলেন তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, ব্যক্তিগত সচিব আব্দুর রহমান সানি, দলের প্রেস উইংয়ের সালেহ শিবলী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কামাল উদ্দীন, সৈয়দ মইনউদ্দিন আহমেদ এবং তাবাসসুম ফারহানা।

ঢাকায় অবতরণের পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানোর কথা রয়েছে। ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে তিনি রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় জুলাই এক্সপ্রেসওয়েতে প্রস্তুত গণসংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন। এরপর তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন এবং সেখান থেকে গুলশান-২ নম্বরের বাসভবনে ফিরবেন।

তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আবেগ ও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। ভোর থেকেই পূর্বাচলের সংবর্ধনাস্থলে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। স্লোগান, প্ল্যাকার্ড আর অপেক্ষার উত্তেজনায় পুরো এলাকা পরিণত হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশে।

২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ১৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন তারেক রহমান। মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে যান তিনি। এরপর একের পর এক মামলার কারণে দেশে ফেরা সম্ভব হয়নি। অবশেষে দীর্ঘ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিনি ফিরলেন নিজের মাতৃভূমিতে।


এই বিভাগের আরো খবর