বিনোদন: সিনেমা হলো কল্পনা, বাস্তবতার মিশেলে নির্মিত এক শিল্পমাধ্যম। তবে কিছু কিছু সিনেমা সেই কল্পনার রেখা অতিক্রম করে বাস্তবতাকেই তুলে ধরে সাহসিকতায়। বিশেষ করে যৌনতা নিয়ে নির্মিত কিছু সিনেমায় এমন দৃশ্যও দেখা গেছে, যেখানে নায়ক-নায়িকা কেবল অভিনয় করেননি-বাস্তবেই মিলিত হয়েছেন ক্যামেরার সামনে। এসব দৃশ্য কোনো রকম বডি ডাবল বা কাট-পেস্ট ছাড়াই ধারণ করা হয়, যা শুধু দর্শকমহলে নয়, চলচ্চিত্র সমালোচকদের মধ্যেও ব্যাপক আলোড়ন তোলে। নিচে এমন ১০টি আলোচিত সিনেমার কথা তুলে ধরা হলো, যেগুলোর যৌনদৃশ্য ছিল বাস্তব সঙ্গমভিত্তিক:
ক্যালিগুলা (১৯৭৯)
রোমান সম্রাট ক্যালিগুলার জীবনের ওপর নির্মিত এই সিনেমাটি যৌনতায় পূর্ণ। নির্মাতারা প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন-এই সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে আসল যৌন দৃশ্য, বডি ডাবল নয়। এতে ওরাল সেক্স, ফুল ফ্রন্টাল ন্যুডিটি-সবই বাস্তব। যদিও সিনেমাটি তীব্র সমালোচিত হয়।
অল অ্যাবাউট আনা (২০০৫)
ডেনিশ নির্মাতা লার্স ভন ত্রিয়ের প্রযোজিত এই সিনেমায় ছিল একাধিক যৌন দৃশ্য, যেগুলোতে চরিত্ররা প্রকৃত অর্থেই যৌনতায় লিপ্ত হন। পরিচালকের মতে, গল্পের প্রকৃতি অনুযায়ী এসব দৃশ্য অপরিহার্য ছিল।
দ্য ব্রাউন বানি (২০০৩)
এই সিনেমার সবচেয়ে আলোচিত দৃশ্য ছিল ক্লোয়ি সেভিঙ্গির ওরাল সেক্স পারফরম্যান্স, যা বাস্তবেই ধারণ করা হয়। সিনেমাটি মুক্তির পর একদিকে বিতর্ক, অন্যদিকে প্রশংসা অর্জন করে।
নিম্ফোম্যানিয়াক (২০১৩)
পুনরায় লার্স ভন ত্রিয়ের। দুই খণ্ডে নির্মিত এই সিনেমাটিতে যৌনতাই মূল বিষয়বস্তু। অনেক দৃশ্যে দেখা গেছে পর্নো তারকাদের। যৌন দৃশ্যের অভিনয় নয়, বাস্তবেই তা শুটিং করা হয়েছে।
লাই উইথ মি (২০০৫)
লরেন লি স্মিথ ও এরিক ব্যালফোরের প্রেম কাহিনি ঘিরে নির্মিত এই সিনেমায় সঙ্গম দৃশ্য এতটাই স্পষ্ট এবং বাস্তব ছিল যে বহু দর্শক সন্দেহ করেন, তারা কি সত্যিই মিলিত হয়েছিলেন? পরে জানা যায়, সেটিই সত্যি।
সুইট সুইটব্যাকস ব্যাডঅ্যাস সং (১৯৭১)
মেলভিন ফান পেবলস অভিনীত এই সিনেমায় যৌন দৃশ্য ছিল বাস্তব। পরবর্তীতে জানা যায়, এতে অংশ নিয়ে তিনি যৌন রোগেও আক্রান্ত হন এবং তা নিয়ে ক্ষতিপূরণও পান।
গান্ডু (২০১০)
বাংলার সিনেমা ‘গান্ডু’তে নগ্নতা, মাদক সেবন, ও গালাগালির পাশাপাশি বাস্তব যৌন দৃশ্যও ছিল। ভারতে এটি কখনো মুক্তি না পেলেও নিউ ইয়র্কে আন্তর্জাতিক ফেস্টিভালে প্রদর্শিত হয় এবং আলোচনা তৈরি করে।
বেইস মোয়া (২০০০)
ফরাসি ভাষায় নির্মিত এই ছবির নামের অর্থই হলো-“আমার সঙ্গে সঙ্গম করো।” সিনেমাটিতে ছিল সম্পূর্ণ বাস্তব যৌন মিলনের দৃশ্য, যা পর্নো সিনেমার সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে।
নাইন সংস (২০০৪)
মাইকেল উইন্টারবটম পরিচালিত এই ব্রিটিশ সিনেমায় বাস্তব যৌন দৃশ্যের সঙ্গে মিউজিক ব্যান্ডের পারফরম্যান্সও যুক্ত করা হয়। এটি শিল্প ও কামনার মিশেলে তৈরি এক বিতর্কিত আর্ট ফিল্ম।
লাভ (২০১৫)
গ্যাসপার নুই পরিচালিত ফরাসি সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবেও দেখানো হয়। সিনেমাটির মূল উপজীব্য ছিল প্রেম ও শরীরী আকাঙ্ক্ষা, যা এতটাই বাস্তবভিত্তিকভাবে দেখানো হয় যে, অনেকেই এটিকে আর্ট পর্নোগ্রাফির কাতারেই ফেলেছেন।
এই সিনেমাগুলোর কিছু চলচ্চিত্র হিসেবে যথেষ্ট সাহসিকতা ও ভিন্নমাত্রার শিল্পচর্চার নিদর্শন, আবার কিছু দর্শকের কাছে অশ্লীলতার সীমানা অতিক্রম করেছে বলেই বিবেচিত। তবে এটি নিশ্চিত, কল্পনার বাইরে গিয়ে বাস্তব যৌনতা দেখানো-বিশ্ব চলচ্চিত্রে এক বিস্ময়কর অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত।