
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুতুবদিয়া (কক্সবাজার): কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের মনোহরখালী এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মিজবাহ উদ্দিন আহমদ কুতুবদিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মিজবাহ উদ্দিন আহমদের পরিবার ও তার পূর্বপুরুষরা দীর্ঘ ৪০-৪৫ বছর ধরে উক্ত জমি ভোগদখল করে আসছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ২৯ জানুয়ারি ভোরে বিবাদী কুতুব আউলিয়া শামশুল উলুম আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ি প্রধান মৌলভী কামাল হোছেনের নেতৃত্বে,মোহাম্মদ হাছান, আকতার হোছনসহ আরও প্রায় ১০-১৫ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক জমিতে প্রবেশ করে। তারা পূর্বের ঘেরাবেড়া ভেঙে নতুনভাবে ঘেরাবেড়া তৈরি করে এবং নিজেদের মালিকানা দাবি করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগীরা বাধা দিলে বিবাদীরা অস্ত্র হাতে হামলার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অভিযোগকারী ও তার পরিবার থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান। পরে কুতুবদিয়া থানার এএসআই সাকিল নাথ পুলিশ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। তবে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় এবং পুনরায় হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগকারীর দাবি।
এ বিষয়ে মিজবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা আদালতের আদেশ মেনে চললেও বিবাদীরা আইন অমান্য করে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে। আমাদের জীবননাশের হুমকিও দিচ্ছে। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কামাল হোসেন ও অন্যান্য বিবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মৌলভী কামাল হোসেন ও অন্যান্য বিবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।
মোহাম্মদ হাছান বলেন, “উক্ত জমি আমাদের পূর্বপুরুষদের নামেই রেকর্ড রয়েছে। অভিযোগকারী পক্ষ মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানির মাধ্যমে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে।”
বিবাদী আকতার হোছন বলেন, “আমরা কোনো বেআইনি কাজ করিনি। আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সঠিক নয়। জমিটি আমাদের, এবং আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
বিবাদীদের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। তবে অভিযোগকারী পক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। এটি জমিজমা সংক্রান্ত আদালতের বিষয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে স্থানীয়দের মতে, উক্ত জায়গা দীর্ঘদিন ধরে বাদি পক্ষ ভোগ দখলে আছেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। দুপক্ষই নিজেদের স্বপক্ষে দলিল ও রেকর্ড থাকার দাবি করছে। প্রশাসন ও আদালতের হস্তক্ষেপেই এর সঠিক সমাধান সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক দখলের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।