শেখ সৈয়দ আলী,ফকিরহাটঃ ফকিরহাট উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ফসলের মাঠে মাঠে হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুল। দূর থেকে সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
এদিকে, ফসলের মাঠে ফোটা ফলগুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যের শোভা ছড়াচ্ছে। তেমনি সরিষার হলুদ রাজ্য দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। একই সঙ্গে শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চাষীরা সরিষা ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা পাওয়ায় উপজেলায় এবার সরিষার চাষ বেড়েছে। উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ২০২৩-২৪ এ সরিষা আবাদ হয়েছিল ১৬৩ হেক্টর, এবং ২০২৪-২৫ এ লক্ষ্যমাত্রা ১৬৪ হেক্টর, ২০২৪-২৫ এ অর্জন ১৬৫.৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ বেড়েছে। এ বছর কৃষি কর্মসূচির আওতায় প্রনোদনার ২০০ জন কৃষক কে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলায় মোট কৃষক ১৬৫০ জন এর মধ্যে ৩৫০ জন কৃষককে সার বীজ দেওয়া হয়েছে।
সরিষা চাষীরা জানান, গত বছর আশানুরূপ দাম পাওয়ায় এবং কৃষি বিভাগ সরিষা চাষে প্রণোদনা দেওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এ বছর উপ জেলায় সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩৮ মেট্রিক টন।
ফকিরহাট উপজেলার কাঠাঁলতলা গ্রামের কৃষক গনেশ চন্দ্র পাল বলেন, গত বছর থেকে আমার জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছিল ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। ফলন ভালো হয়েছিল। তিনি আরও বলেন,কৃষি অফিস থেকে সার বীজ পেয়েছি এবছরও গত বছর সরিষা চাষে আশানুরূপ লাভ হওয়ায় এবার এক একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি এবারও ভালো ফলন ও ভালো দাম পাবো। উপজেলার লখপুর ব্লকের কৃষক রুস্তম গাজী বলেন, গত বছর প্রায় ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম, দাম ভালো পেয়েছি। এবছরও কৃষি অফিসের সহযোগীতা থাকায় আরো বেশী জমিতে সরিষা চাষ করছি।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরিষা ৩ মাস মেয়াদি ফসল। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে সরিষা চাষ করতে পারেন কৃষকেরা। বর্তমানে সরিষা চাষ কৃষকের কাছে লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। কৃষককে সরিষা বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। গত বছর সরিষার আশানুরূপ ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকেরা উৎসাহী হয়েছেন। সরিষা চাষ একদিকে যেমন মাটির উর্বরতা বাড়ায়, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি আরও জানান, আশা করছি কৃষকরা সরিষার ভালো ফলনে লাভবান হবেন। এখানকার উৎপাদিত সরিষার তেল উপজেলার ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণেও বড় ভূমিকা রাখবে।