বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

জাহাজে সাত খুন: ছেলে হারানোর শোকে বাবারও মৃত্যু

প্রতিনিধি: / ২১৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

চার দিন আগে চাঁদপুরের হাইমচরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জাহাজের সাত কর্মচারী। এদের একজন সজীবুল ইসলাম। তিনি জাহাজটিতে গ্রিজার হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নে। গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। জানা যায়, পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন সজীবুল। পাঁচ বছর ধরে জাহাজের বিভিন্ন পদে চাকরি করেছিলেন তিনি। সমপ্রতি জাহাজের চাকরিতে পদোন্নতি পেতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সেই ফলাফলের অপেক্ষায় ছিলেন। মাঝের এই সময়টায় বসে না থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে চাকরি নেন সজীব। ছেলেকে হারানোর শোক সইতে পারেননি বাবা দাউদ মোল্যা। ছেলের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সংবাদ শোনার পর থেকেই অনবরত কাঁদতে থাকেন তিনি। সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনরা। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন দাউদ মোল্যা। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়। বাবা-ছেলের এমন মৃত্যুর সংবাদে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সজীবের মামা আহাদ সরদার গতকাল শুক্রবার সকালে দাউদ মোল্যার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ ওর (সজীব) বিয়ের পাঁচ মাস পূর্ণ হবে। পদোন্নতি হলে বেতন বাড়বে, বড় জাহাজে চাকরি হবে- এ কারণে পরীক্ষা দিয়েছিল। দুই সপ্তাহ আগে বাড়িতে ধান কাটার কাজ করে গেছে। যাওয়ার সময় বাড়িতে বলে গেছে, রেজাল্টের অপেক্ষায় ঘরে বসে না থেকে ছোট একটা জাহাজে কাজ করে আসি, তাতে কিছু রোজগার হবে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেলো। মহম্মদপুর থানার ওসি আব্দুর রহমান জানান, জাহাজে হত্যার শিকার সজীবুলের বাবা দাউদ মোল্যার মৃত্যুর সংবাদ রাতেই জানতে পেরেছেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাগুরার মহম্মদপুর ও নড়াইল সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইউনিয়নের বহু মানুষ জাহাজে চাকরি করেন। এর আগে, ২০২২ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এমভি সুলতান সানজানা নামের লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় মহম্মদপুরের পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের চার জন নিহত হন। উল্লেখ্য, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ‘এমভি আল-বাখেরা’ নামের সার বহনকারী একটি জাহাজ থেকে সোমবার বিকাল ৩টায় পাঁচ জনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় আরও তিন জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন মারা যান। বেঁচে থাকা জুয়েল নামে একজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আকাশ মণ্ডলের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে নৌযান শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করছেন। এর ফলে নৌপথে তেল, গ্যাস ও বালুবাহীসহ মালবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান এ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকছে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।


এই বিভাগের আরো খবর