সর্বশেষ :
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

স্বপ্নময় দিন জর্ডানের

প্রতিনিধি: / ২২৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪

স্পোর্টস: এই বারবাডোজেই জন্ম ক্রিস জর্ডানের। এই মার্টি, এই আলো-হাওয়াতেই তার বেড়ে ওঠা। জীবনের প্রথম ক্রিকেট ম্যাচটি দেখেছেন তিনি এই কেনসিংটন ওভালের গ্যালারিতে বসেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে। জীবনের নাটকীয় পালাবদলে সেই মাঠেই তিনি এক ওভারে হ্যাটট্রিকসহ চার উইকেট নিলেন ইংল্যান্ডের জার্সিতে। সেই সাফল্যে গ্যালারিতে উল্লাসে মেতে উঠল তার পরিবার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক, সেটিও বিশ্বকাপের মঞ্চে, এমনিতেই দারুণ অর্জন। জর্ডানের জন্য উপলক্ষটি আরও রঙিন ও স্মরণীয় হয়ে উঠেছে জন্মভ‚মিতে পরিবারের সদস্যদের স্বাক্ষী রেখে এমন কিছু করতে পারায়। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ পেসার আপ্লুত কণ্ঠে বলছেন, তার ক্যারিয়ারের সেরা দিনগুলির একটি এটি। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচে রোববার যখন ১৯তম ওভারে আক্রমণে আসেন জর্ডান, দুই ওভার বোলিং করে তখনও পর্যন্ত তিনি উইকেটশূন্য। ওভারের প্রথম বলে তিনি ফিরিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সময়ের ভরসা কোরি অ্যান্ডারসনকে। পরের ডেলিভারিতে রান হয়নি। এরপর টানা তিন বলে বোল্ড, এলবিডবিøউ, বোল্ডৃ কোনো ফিল্ডারের সহায়তা ছাড়াই হ্যাটট্রিক! একটু আগেও ৫ উইকেটে ১১৫ রানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র শূন্য রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ধ্বংসস্তুপ। পরে অধিনায়ক জস বাটলারের তাÐবে (৭ ছক্কায় ৩৮ বলে ৮৩*) ৯.৪ ওভারে সেই রান তাড়া করে ইংলিশরা রান রেট এমন উচ্চতায় নিয়ে গেল যে, সবার আগে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলল। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থবার চার উইকেট, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাত্র দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারে চার উইকেটের কীর্তি, সব মিলিয়ে জর্ডান যখন উচ্ছ¡াসে উড়ছেন, গ্যালারিতে তখন তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরাও নেচে উঠেছেন আনন্দে। সব কিছু মিলিয়ে জর্ডানের কণ্ঠে ফুটে উঠল তৃপ্তির ছোঁয়া। “হ্যাঁ, দারুণ একটি দিন। আমার পরিবার এমনিতে বিশ্বময় ভ্রমণ করে আমার খেলা দেখে না খুব একটা। কাজেই তাদের সামনে এমন কিছু করতে পারা ক্যারিয়ারের সেরা দিনগুলির মধ্যেই থাকবে। তাছাড়া বিশ্বকাপের ম্যাচে এমন কিছু করা, সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলা, সব মিলিয়ে অবশ্যই সেরা দিনগুলির মধ্যে থাকবেৃ অনেক উঁচুতেই।” “সবাই ছিল এখানেৃ তালিকা চলতেই থাকবে। মা, বাবা, বোন, শ্যালক, ভাগ্নেৃ আমার ভাগ্নে সকালে ফোন করে বলেছে, ‘আজকে যদি মাঠে নামো, তাহলে তিনটি উইকেট যেন নিতে পারো।’ হ্যাটট্রিকের পর তাকিয়ে যখন দেখলাম সে খুশিতে লাফাচ্ছেৃ একদিন সে নিজেও হয়তো মাঠে নেমে এমন কিছুর চেষ্টা করবে। তো, পরিবারের সদস্যের জন্য আদর্শ হয়ে উঠতে পারা এবং এরকম সব ব্যাপার মিলিয়েৃ এটা সত্যিই অসাধারণ একটা দিন।” একসময় ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে তার নাম ছিল অপরিহার্য। তবে এখন আর নিয়মিত সুযোগ পান না ৩৫ বছর বয়সী পেসার। এই বিশ্বকাপেই যেমন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রæপ ম্যাচে খরুচে বোলিংয়ের পর ওমানের বিপক্ষে একাদশে রাখা হয়নি তাকে। এরপর নামিবিয়ার বিপক্ষে ফেরানো হয়। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবার একাদশের বাইরে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ফিরে তিনি নিশ্চিত করলেন, সহজে একাদশের বাইরে রাখা যাবে না! বারবার একাদশে আসা-যাওয়া করতে থাকলে অবশ্য মানিয়ে নেওয়ার কাজটা কঠিন হওয়ার কথা। তবে ৯৪ ম্যাচের অভিজ্ঞ পেসার বললেন, তিনি নিজের মতো করেই মানিয়ে নিয়েছেন। “খুব বেশি চ্যালেঞ্জ এখানে নেই, কারণ যথেষ্ট ক্রিকেট আমি খেলেছি। দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে যোগাযোগটা খুব ভালো ছিল। আমার নিয়ন্ত্রণে যা কিছু আছে, সেসবই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি আমি। একাদশে না থাকলেও চেষ্টা করি সবার পাশে থাকতে, ছেলেদের পরিকল্পনায় সহায়তা করতে এবং নিশ্চিত করি চাই, মাঠে নেমে সবাই যেন উজ্জীবিত থাকে।” “দলে আসা-যাওয়া নিয়ে ভাবার সময়ও তাই খুব একটা মেলে না। আমি যা করতে পারি, তা হলো অনুশীলন করে যাওয়া এবং প্রতিটি ম্যাচের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকা, তা সুযোগ আসুক বা না আসুক। এসব আমাকে খুব একটা ভাবায় না।”

 


এই বিভাগের আরো খবর