বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইপিআই, ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য এবং শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়েছে, “টাইফয়েড টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত এবং সৌদি আরব হালাল সেন্টার কর্তৃক হালাল হিসেবে প্রত্যয়িত।”
সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, “বিশ্ব বিখ্যাত সাইন্টিস্টদের দ্বারা স্বীকৃত এবং সমস্ত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এ টিকাটি মান নির্ধারিত ও কার্যকারিতায় পরীক্ষিত। ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টিকাটি ব্যবহৃত হয়েছে, যা নিরাপদ ও কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের উচিত প্রতিটি শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া।”
সভা থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার টিকাদান কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ এর আওতায় নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রদান করছে।
এ ক্যাম্পেইনের আওতায় মাদ্রাসা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত সব ছাত্র-ছাত্রী (প্লে/নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন থেকে ৯ম শ্রেণি/সমমান শ্রেণি পর্যন্ত) এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা কমিউনিটির নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সীসহ প্রায় চার কোটি ৯০ লাখ শিশুকে এক ডোজ টিসিভি (টিসিভি) টিকা দেওয়ার লক্ষ্য মাত্রা ঠিক করা হয়। তবে, ডিএইচআইএস২ মাইক্রোপ্ল্যান অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা ৪৩,৭৯৬,৪৫৩ হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ থেকে এ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে যা ১৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চলমান থাকবে। অদ্যাবধি ১ কোটি ৫০ লাখ ৫৪ হাজার ৬৫ জন শিশুকে এ টিকা প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং তাদের মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, ওই বছর বাংলাদেশে টাইফয়েড জ্বরে চার লাখ ৭৮ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছিল এবং আট হাজার মৃত্যু ঘটেছিল। এদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই ছিল শিশু। বাংলাদেশে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাই টাইফয়েড জ্বরে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
সভায় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির অগ্রগতি এবং শক্তিশালীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ উপস্থাপন করেন ইপিআই অ্যান্ড সারভিলেন্স উপ পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ।