• শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ০৮:৫৩

ড. ইউনূস ‘পদত্যাগ’ প্রশ্নে যা বললেন

প্রতিনিধি: / ৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একধরনের জল্পনা ছড়িয়েছিল। বলা হচ্ছিল, তিনি যদি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে ঐকমত্য না দেখেন, তাহলে দায়িত্ব ছাড়ার কথা বিবেচনা করতে পারেন। এই বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, তিনি বাংলাদেশে যখন কোনো মন্তব্য করেননি, তখন জাপানের মতো বিদেশি মাটিতে তা নিয়ে কিছু বলা তার জন্য ‘বিপজ্জনক’ হতে পারে।

জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই অবস্থান তুলে ধরেন ড. ইউনূস। জাপানের রাজধানী টোকিওতে আয়োজিত ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময়, বৃহস্পতিবার (২৭ মে) তার এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।

সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু মন্তব্য করেন ড. ইউনূস। তিনি জানান, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। একই সঙ্গে, দেশের ভেতরে প্রায় ১১ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইতিমধ্যে শনাক্ত ও জব্দ করা হয়েছে। তার ভাষায়, এই বিপুল অর্থ যদি বর্তমান সরকার পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় করার জন্য দুটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। এই তহবিল দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়ন ও তরুণ উদ্যোক্তা গঠনে সহায়ক হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কূটনৈতিক অর্থনীতির দিকেও ইঙ্গিত দেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের প্রেক্ষাপটে সুতা, তেল ও গ্যাস আমদানির নতুন পথ খুঁজছেন বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, মধ্য এশিয়া ও ভারত থেকে প্রচুর সুতা কেনা হলেও এখন বিকল্প হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দিকেও নজর দেওয়া যেতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য আনা সহজ হবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার কথাও জানান, যদিও সেই আলোচনার সময়সূচি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের এক রায়ের কথাও সাক্ষাৎকারে উঠে আসে, যেখানে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কংগ্রেসের, এককভাবে প্রেসিডেন্টের নয়। এই রায়ের ফলে বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি আপাতত স্থগিত রয়েছে।

ড. ইউনূসের বক্তব্য, দেশীয় রাজনীতির টানাপোড়েন এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির চাপে বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তা একসঙ্গে প্রতিফলিত হয়েছে এই সাক্ষাৎকারে। বিদেশ সফরের সময় এমন সংবেদনশীল বিষয়ে সতর্কতা বজায় রাখা এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ইঙ্গিত — দুই দিক থেকেই এটি গুরুত্বপূর্ণ।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com