সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে, যা বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন। এ রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
বাগেরহাটের চারটি আসন নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ১৯৬৯ সাল থেকে এখানে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে রাজনৈতিক দলগুলো সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে হরতাল, অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি চালায়।
৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। হাইকোর্টে দায়ের করা দুটি রিটে বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা আইনজীবী সমিতি ও অন্যান্য সংগঠন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে।
হাইকোর্ট ১০ নভেম্বর এই গেজেট অবৈধ ঘোষণা করে চারটি আসন পুনর্বহাল এবং কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট গেজেট জারি করতে নির্দেশ দেয়। আপিল বিভাগের আজকের আদেশে নির্বাচন কমিশনের লিভ টু আপিল খারিজ করা হয়েছে। এর ফলে বাগেরহাটে সংসদীয় আসন আগের চারটি অবস্থায় বহাল থাকবে, পাশাপাশি গাজীপুরে পাঁচটি আসন বজায় থাকবে।
বাগেরহাটের চারটি আসন হলো: বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)। রিট শুনানিতে ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী হাইকোর্টের পক্ষে এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন।
আজকের রায়ে আদালত হাইকোর্টের নির্দেশিকাও স্থির রাখেছে, যা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও গণমানুষের স্বার্থ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।