বিদেশ : প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে রাশিয়া থেকে একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন ‘লিজ’ নিচ্ছে ভারত। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় এক দশক ধরে আলোচনার পর ভ্লাদিমির পুতিনের নয়াদিল্লি সফরের সময় এটির সরবরাহ চূড়ান্ত করা হবে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া থেকে আক্রমণাত্মক সাবমেরিনটি লিজ নেওয়ার আলোচনা বছরের পর বছর ধরে স্থগিত ছিল। তবে উভয় পক্ষ এখন চুক্তিতে একমত হয়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা নভেম্বরে একটি রাশিয়ান শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন। নয়াদিল্লি দুই বছরের মধ্যে জাহাজটি সরবরাহ করার আশা করছে। গতকালবৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুতিনকে বহনকারী বিমান ভারতে অবতরণ করবে। তিনি দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি সম্পর্ক জোরদার করতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সামপ্রতিক মাসগুলোতে মোদি রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। মোদির সরকার বর্তমানে এই শুল্ক কমানোর জন্য একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। পুতিনের সফরের আগে ভারতের নৌবাহিনী প্রধান দীনেশ কে ত্রিপাঠী এই সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আক্রমণাত্মক সাবমেরিনটি শিগগিরই অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। এই সাবমেরিনটি দেশটির নৌবাহিনীর বহরে ইতোমধ্যেই থাকা দুটি সাবমেরিনের চেয়ে বড় হবে। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও তথ্যের জন্য পাঠানো ইমেলের কোনো জবাব দেয়নি। রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোও মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।উদ্দেশ্য হলো ‘প্রশিক্ষণ’ ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, লিজের শর্ত অনুসারে, রাশিয়ান আক্রমণাত্মক সাবমেরিন যুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না। এটি ভারতকে নাবিকদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং নিজস্ব জাহাজ তৈরির সময় পারমাণবিক-নৌকা পরিচালনা উন্নত করতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। রাশিয়ার লিজ নেওয়া সাবমেরিনটি ১০ বছরের জন্য ভারতের নৌবাহিনীর কাছে থাকবে। সর্বশেষ রাশিয়ান সাবমেরিনটি – ১০ বছরের জন্য লিজে ছিল, সেটি ২০২১ সালে ফিরে গেছে বলে জানা গেছে। ভারত মস্কোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে, একই সঙ্গে আমেরিকার সাথে আরও গভীর সম্পর্ক স্থাপন করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে আরও অস্ত্র কিনে রাশিয়ান অস্ত্রের ওপর নির্ভরতা কমিয়েছে। অপরদিকে, দক্ষিণ কোরিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরিতে কাজ করছে। ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার ওপর পারমাণবিক সাবমেরিনের নির্ভরতার মোদির সিদ্ধান্ত থেকে বোঝা যায়, গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মগুলোতে মস্কোর সঙ্গে ভারতের স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে।