বিচার বিভাগ ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়, সংবিধান নির্বাক হয়ে পড়ে এবং মানুষের আশা ধ্বংস হয়। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীতে একটি হোটেলে বিচার বিভাগ নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জুলাই বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল সংবিধান উৎখাত করা নয়, বরং এর সঙ্গে সম্পর্ককে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিপূর্ণ করা। তাঁর ভাষায়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং জনসাড়া তখন জনমানসে প্রধান সুর হয়ে উঠেছিল। বিশ্বজুড়ে অস্থির সময়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আদালতকে আধুনিক, নৈতিক ও দক্ষ করতে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের সংস্কার রোডম্যাপ গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বড় শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় বর্তমানে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট এখন বড় চ্যালেঞ্জ, তবে বাংলাদেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সমস্যার সমাধানে নিজস্ব উদ্যোগই গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে রাজধানীতে বিএসএমএমইউয়ের সমাধি এলাকায় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুম খুন না থাকলেও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে। শনিবার ২২ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে তিনি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তাঁর অভিযোগ, সন্ত্রাস দমনে সরকারের শিথিলতার কারণে যুবদল নেতা কিবরিয়ার মতো হত্যাকাণ্ড ঘটছে।
ঢাকা শহরকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতে অনুমোদন ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, যার দায় রাজউককে বহন করতে হবে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিচার বিভাগের সংস্কার, রাষ্ট্রের জবাবদিহি এবং রাজনৈতিক পরিবেশ—সব মিলিয়ে শনিবারের বক্তব্যগুলো আলোচনায় নতুন মাত্রা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মন্তব্য এবং বিচার বিভাগের করণীয় নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরও বিতর্ক দেখা দিতে পারে।