বিদেশী বংশোদ্ভূত কোনো কোচের অধীনে কোনো দেশ এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। তবে কার্লো আনচেলত্তি বলেছেন ‘সবসময়ই প্রথম’ বলে একটি বিষয় থাকে এবং ব্রাজিলের হয়ে সেই গৌরব অর্জনের জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন। গত মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ছয় দশকের মধ্যে ব্রাজিলের প্রথম বিদেশী কোচ হয়েছিলেন এই ইতালীয় এবং তিনি পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের আগামী ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে সহায়তা করেছেন। গত সপ্তাহে সিউলে প্রীতি ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ব্রাজিল। আনচেলত্তি বলছেন তিনি নিজের এবং একইসঙ্গে ব্রাজিলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেঙ্েিকাতে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যস্থির করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল জাতীয় দলের জন্য নিজের সেরাটা দেওয়াই আমার লক্ষ্য। ব্রাজিল যাতে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে সেজন্য তাদেরকে সহযোগিতা করতে চাই এবং একসাথে বিশ্বকাপ জিততে চাই। অবশ্যই কোনো বিদেশী কোচের অধীনে কোনো দল এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেনি। কিন্তু জীবনে সবসময়ই প্রথম বলে একটি বিষয় আছে।’ লাতিন আমেরিকান বাছাইপর্বে টেবিলের পঞ্চম স্থানে থেকে বেশ কঠিন অবস্থায় বিশ্বকাপের টিকেট পেয়েছে ব্রাজিল। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনারে ক্রোয়েশিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নেওয়ায় তিতে সরে যাবার পর চতুর্থ কোচ হিসেবে ব্রাজিল জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন আনচেলত্তি। আনচেলত্তির অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্রাজিল দুর্দান্ত পারফরর্ম করেছে। ১৮ বছর বয়সী তরুণ তুর্কি এস্তেভাও করেছেন জোড়া গোল। স্কোরশিটে আরও নাম লিখিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের দুই তারকা রদ্রিগো ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রীতি ম্যাচ হলেও দলের দারুণ এই জয়ে সমর্থকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আনচেলত্তি বলেছেন তার দলের এর থেকেও বেশী দেওয়ার ক্ষমতা আছে, ‘সুন্দর ফুটবল খেলার যোগ্যতা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের রয়েছে। কিন্তু সুন্দর ফুটবল বলতে কি বোঝায় সেটা নিয়েও চিন্তা করতে হবে। ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত গুণ রয়েছে। কিন্তু সবাই মিলে একটি টিমওয়ার্কের মাধ্যমে ফুটবল খেলতে হয় এবং ম্যাচে এগিয়ে যেতে হয়। যেকোনো মুভমেন্টে সকলের মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। ফুটবলে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ৩৩ বছর বয়সী অভিজ্ঞ তারকা নেইমারকে ছাড়াই এশিয়া সফরে এসেছে ব্রাজিল। ঊরুর ইনজুরির কারণে নভেম্বর পর্যন্ত মাঠের বাইরে রয়েছেন এই সুপারস্টার। বিশ্বকাপের আগে নিজেকে ফিট প্রমাণ করে দলে ফেরাই এখন রেকর্ড এই গোলদাতার সামনে মূল চ্যালেঞ্জ। আনচেলত্তি স্বীকার করেছেন নেইমারের যোগ্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, ‘নেইমার যদি শারীরিক ভাবে ফিট থাকে তবে অবশ্যই জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা রাখে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। ফিট থাকলে বিশ্বের যেকোনো দলেই সে খেলতে পারে।’ আনচেলত্তি দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্রাজিল পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই কোনো গোল হজম করেনি। এর আগে অবশ্য ব্রাজিলের রক্ষণভাগ নিয়ে দারুণ সমালোচনা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে নিউক্যাসল মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারায়েস বলছেন, ‘আনচেলত্তি ইতালিয়ান, সে দলকে প্রতিরোধ করার কৌশল ভালোই জানে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের ইতিহাস বলে যে দল কোনো গোল হজম না করলে তারাই শিরোপা জিতে। সে কারণে নিজেদের প্রতিরোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’