দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, একদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও চারজন এবং নতুন করে ৭৮১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম প্রকাশিত দৈনিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২২৪ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৫২ হাজার ৮৮৫ জন।
অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, শুধু অক্টোবর মাসেই এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২৬ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২ হাজার ৪৫২ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ভর্তি আছেন ৮২৭ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে ১ হাজার ৬২৫ জন রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বছরের শুরু থেকে প্রতি মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ওঠানামা করলেও সেপ্টেম্বর মাসে সংক্রমণ ছিল সর্বোচ্চ। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন, জুলাইয়ে ১০ হাজার ৬৮৪ জন, আগস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে সর্বাধিক ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।
মৃত্যুর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ৩ জন, জুনে ১৯ জন, জুলাইয়ে ৪১ জন, আগস্টে ৩৯ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২৪ সালের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু সংক্রমণ কিছুটা কম হলেও ঝুঁকি রয়ে গেছে। গত বছর দেশে মোট ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে রেকর্ডসংখ্যক ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন আক্রান্ত হন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০৫।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ণের অনিয়ম এবং মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ঘাটতির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাই তারা মৌসুমি বৃষ্টি শেষে মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।