সর্বশেষ :
ফলোআপ: পাইকগাছায় কোটিপতির ভবন রক্ষায় সড়ক সরলীকরণ না হয়ে হচ্ছে বাঁকা: নকশা পরিবর্তন ও মাদ্রাসা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন পাইকগাছায় আমন ধানের ফলন ভাল হলেও ধানের মূল্য কম হওয়ায় কৃষক হতাশ ডেইলি স্টার অফিসে হামলা-ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয় ভাংচুর করে নথিতে আগুন দিলো বিক্ষুদ্ধ জনতা হাদি হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার শাহবাগ অবরোধ চট্টগ্রামে রাতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলা, আটক ৮ ছায়ানটের ভেতরে পোড়া বই আর ভাঙা বাদ্যযন্ত্র, বাইরে কড়া পুলিশ পাহারা আজ সন্ধ্যায় দেশে আসবে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ, জানাজা শনিবার জব্দ রুশ সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে ইইউ নেতারা লুকানো কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বাড়াচ্ছে ইউক্রেন
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৫ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান চলছে বাহিরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাচ্ছে সেই ভাঙা ভবনে

প্রতিনিধি: / ১০১ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫
1-4608x3466-1-0#

শেখ সৈয়দ আলী, ফকিরহাটঃ  জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান চলছে বাহিরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাচ্ছে সেই ভাঙা ভবনে। বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার অন্যতম প্রাচীন এই বিদ্যালয়টি ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু দীর্ঘ পথচলার পরও এ বিদ্যালয়টি এখনো নতুন ভবনের মুখ দেখেনি। জরাজীর্ণ ভবনে ৯০০ শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে।

1-4608×3466-1-0#

সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৩২ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাহিরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে ভয় ও ঝুঁকির মধ্যে শিক্ষাদান। বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষেই দেয়ালজুড়ে বড় বড় ফাটল, পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদ ও বিম থেকে রড বেরিয়ে এসেছে, অনেক জায়গায় রডে জং ধরে ঝুলে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষে। দেয়ালের নিচে ভেজা মেঝেতে বসে পাঠ নিতে হয় শিক্ষার্থীদের। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শিক্ষার্থী মারুফা জানায়, এই ভাঙা বিল্ডিংয়ে ক্লাস করতে তাদের খুব ভয় লাগে। প্রায়ই পলেস্তারা খুলে পড়ে এবং বালির ধুলো গায়ে ও চোখে লাগে। এতে পড়াশোনায় সমস্যা হয়। আরেক শিক্ষার্থী সাকিব বলে, বৃষ্টি হলেই ক্লাসরুমে পানি পড়ে, বইখাতা ভিজে যায়। তারা সবাই চায়, খুব দ্রুত যেন এই সমস্যার সমাধান হয়।

1-4608×3466-1-0#

বিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট পাঁচটি ভবন থাকলেও তার মধ্যে চারটি বহু আগেই ফায়ার সার্ভিস ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। ভবনগুলোর ছাদ ও দেয়াল প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায়। নেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞানাগার বা নামাজের নির্ধারিত স্থান। মেয়েদের জন্য নেই কমনরুমও। নেই অফিস সহকারী, ফলে শিক্ষকরা একদিকে ক্লাস নিচ্ছেন, অন্যদিকে অফিসের কাজ সামলাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ শেখ জানান, তিনি নিজেও এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। বহুবার আবেদন করেও আজ পর্যন্ত কোনো সুফল মেলেনি। শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যেই প্রতিদিন ক্লাস করাতে হচ্ছে, যা খুবই হতাশাজনক।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ ফরহাদ হোসেন বলেন, তিনি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন এবং দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিদ্যালয়ের অবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত ভবন বরাদ্দসহ সার্বিক পরিবর্তনে পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বাস দেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, তিনি বিদ্যালয়টি নিজে পরিদর্শন করেছেন। ভবনগুলোর অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং করুণ বলেই মনে হয়েছে তার কাছে। তিনি বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন এবং আশ্বস্ত করেন যে খুব দ্রুতই এই সমস্যা সমাধান হবে।
ঐতিহ্য, সাফল্য ও গৌরব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এ বিদ্যালয়টি আজ ভেঙে পড়া ভবনের নিচে অসহায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে স্কুলে আসে, অভিভাবকরাও সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিকল্প না থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে ঝুঁকির মধ্যেই সন্তানকে পাঠাচ্ছেন স্কুলে।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন—একটি টেকসই ভবন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা দ্রুত নিশ্চিত করা হোক। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য একটি নিরাপদ, সুষ্ঠু ও উন্নত পাঠশালা গড়ে তোলাই এখন সময়ের দাবি।


এই বিভাগের আরো খবর