জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দাবি করেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিককে হত্যা করেছে। এই হত্যাযজ্ঞ শুধুই একটি সংঘর্ষ নয়, বরং এটি একটি চলমান গণহত্যা। তিনি এ অপরাধের জন্য দায়ী সবাইকে আন্তর্জাতিক আদালতের আওতায় আনতে জাতিসংঘ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকর উদ্যোগ কামনা করেন।
সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে হলে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে।” এই লক্ষ্যে একটি দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানকেই একমাত্র টেকসই সমাধান হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই তিনদিনব্যাপী মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ উন্মুক্ত করা। সম্মেলনে বাংলাদেশসহ মোট ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
গাজা পুনর্গঠনে আরব বিশ্বের পরিকল্পনার প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রমে যেকোনো প্রকার বাধা সৃষ্টির প্রচেষ্টা সর্বাত্মকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।
সম্মেলনের বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে জাতিসংঘকে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সম্মেলনের এসব তথ্য জানানো হয়।