• মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫১

রাশিয়ায় জোড়া সেতু ধসের পেছনে বিস্ফোরণ-সন্ত্রাসী হামলা?

প্রতিনিধি: / ৬ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫

বিদেশ : ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার দুটি অঞ্চলে সেতু ধসে পড়ে সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় রুশ কর্মকর্তারা রবিবার জানিয়েছেন, এগুলো বিস্ফোরণের কারণে ঘটেছে এবং ঘটনাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে শনিবার দিবাগত রাতে বিস্ফোরণের ফলে একটি সড়ক সেতু ভেঙে পাশের রেললাইনের ওপর পড়ে যায়। এতে মস্কোমুখী একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে এবং সাতজন নিহত হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এর কয়েক ঘণ্টা পর রবিবার ভোরে পাশের কুরস্ক অঞ্চলেও একটি রেলসেতু বিস্ফোরণে ধসে পড়ে। এতে একটি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয় এবং চালক আহত হন। কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কারা এসব বিস্ফোরণের পেছনে রয়েছে তা জানায়নি। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই ঘটনার বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে রাতভর অবহিত করা হয়েছে। এদিকে ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের ঘটনাস্থলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে রুশ রেলওয়ের একটি ট্রেনের চূর্ণবিচূর্ণ চ্যাসিসের ওপর উদ্ধারকর্মীদের উঠতে দেখা যায়। আরেকটি ভিডিওতে আর্তচিৎকার শোনা যায়। ওই অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার বোগোমাজ টেলিগ্রামে লিখেছেন, রেললাইনের ওপর একটি সেতু ধসে পড়ার ফলে সাতজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের জানান, অন্তত ৭১ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। অন্যদিকে কুরস্ক অঞ্চলের ঘটনায়, একটি রেলসেতু ধসে পড়ে নিচের সড়কে পড়ে যায় এবং একটি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ওই অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার খিনস্টেইন টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘গত রাতে…ঝেলেজনোগোরস্ক জেলায় একটি মালবাহী লোকোমোটিভ চলার সময় একটি সেতু ধসে পড়ে। ট্রেনের একটি অংশ নিচের সড়কে পড়ে যায়। লোকোমোটিভের একজন চালকের পা ভেঙে গেছে এবং সব ক্রু সদস্যকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
‘অবৈধ হস্তক্ষেপ’
রুশ তদন্ত সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি কে বা কারা এই হামলার পেছনে রয়েছে। তবে রাশিয়ার তদন্ত কমিটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ঘটনাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, যদিও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। অন্যদিকে রাশিয়ার ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য আন্দ্রে ক্লিশাস ইউক্রেনকে দায়ী করে বলেছেন, দেশটি একটি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে’ পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনকে আগেও এ ধরনের হামলার জন্য দায়ী করেছে রাশিয়া। তবে এবার তারা এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রাশিয়ায় অসংখ্য নাশকতা হামলা হয়েছে, যার অনেকগুলোতে লক্ষ্য করা হয়েছে দেশটির বিস্তৃত রেলপথ নেটওয়ার্ককে। কিয়েভ বলেছে, রাশিয়া এই রেলপথগুলো ব্যবহার করে সেনা ও অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠায়। এই ঘটনাগুলো এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে ইস্তাম্বুলে একটি সম্ভাব্য বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধ বন্ধের জন্য নতুন তৎপরতা শুরু হয়েছে। তিন বছর ধরে চলা রাশিয়ার এই সামরিক আগ্রাসনে বহু প্রাণহানি ঘটেছে। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা দখলে রেখেছে।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com