বিদেশ : পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি প্রশাসনিক রাজধানী রামাল্লায় আরব নেতাদের পরিকল্পিত বৈঠক আটকে দিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে হিব্রু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে যোগদানের পরিকল্পনাকারী আরব মন্ত্রীদের (রামাল্লায়) আসতে দেওয়া হবে না। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা তীব্রতর হওয়ার মাঝে গত রোববার অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লাহয় আরব নেতাদের বিরল এই সফর হওয়ার কথা রয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিনিধি দলে জর্ডান, মিশর, সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আছেন। জর্ডান থেকে পশ্চিম তীরে ভ্রমণের জন্য মন্ত্রীদের ইসরায়েলি সম্মতির প্রয়োজন হবে। ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথের খবর অনুসারে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, তেল নেতানিয়াহুর সরকার আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতিনিধিদলের রামাল্লায় পূর্বনির্ধারিত সফর আটকে দিয়েছে। সেখানে তাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্য ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দৈনিকটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রচারের জন্য রামাল্লায় আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পরিকল্পিত বৈঠক অগ্রহণযোগ্য। ইসরায়েল তার নিরাপত্তার ক্ষতি করার লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপে অংশগ্রহণ করবে না।’ এর আগে গতকাল শুক্রবার প্যালেস্টাইন মুক্তি সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য আহমেদ মাজদালানি আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, আরব মন্ত্রীদের একটি প্রতিনিধিদল রোববার রামাল্লায় পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাজদালানির মতে, এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা। এর লক্ষ্য ছিল, গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর বিরোধিতা একযোকে প্রকাশ করা। আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন অনুসারে, রিয়াদে আরব-ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে গঠিত মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির অংশ হিসেবে গঠিত এই প্রতিনিধিদলটি জুনের মাঝামাঝি সময়ে নিউইয়র্কে সৌদি আরব ও ফ্রান্সের যৌথ নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতব্য একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। সম্মেলনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করার ওপর আলোকপাত করা হবে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরজুড়ে দখলদার বাহিনী এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় কমপক্ষে ৯৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গত জুলাইয়ে ঘোষণা করে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের দখলদারিত্ব অবৈধ. পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের সমস্ত বসতি খালি করার আহ্বান জানিয়েছে আদালত।