আন্তর্জাতিক: পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষাপটে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত রাখার কোনো পরিকল্পনা নেই-এমনটাই জানিয়ে দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে তেহরান কোনো আপস করবে না।
এই অবস্থান পরিষ্কার করা হয় সোমবার, যখন তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্ভাব্য ষষ্ঠ দফা আলোচনার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। তিনি জানান, “ইরান কখনোই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত করতে রাজি হবে না।”
পূর্ববর্তী দফাগুলোর মতো ষষ্ঠ দফা আলোচনাও মধ্যস্থতা করছে ওমান। তবে এখনও আলোচনার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা হয়নি। ইসমাইল বাঘাই বলেন, “আমরা ওমানের কাছ থেকে সময়সূচি ও আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় আছি।”
বিবিসি এবং রয়টার্স জানায়, ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি তিন বছরের জন্য স্থগিত রাখতে পারে-এমন সংবাদ প্রকাশের পর এই বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করে ইরান জানায়, এ ধরনের প্রতিবেদন “সম্পূর্ণ ভুল”। এক সংবাদ সম্মেলনে বাঘাই বলেন, “ইরান কখনই তা মেনে নেবে না।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও কঠোর বার্তা দেন। তিনি বলেন, “যদি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বা নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলে এমন নয় যে আমরা না খেয়ে মারা যাব। আমরা টিকে থাকার পথ খুঁজে নেব।” এই মন্তব্য ইরনা বার্তা সংস্থা উদ্ধৃত করেছে।
অন্যদিকে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এসেছে তুলনামূলকভাবে আশাবাদী সুর। ২৫ মে রবিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আলোচনা খুব ভালো হয়েছে, এবং আগামী দুই দিনের মধ্যে ঘোষণা আসতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বাস্তব ও গুরুত্বসহকারে অগ্রগতি করেছি।”
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচিও পঞ্চম দফা আলোচনার পর এমন একটি বার্তা দেন যাতে অগ্রগতির ইঙ্গিত ছিল। এসব বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অস্থায়ী একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, মুখপাত্র বাঘাই এইসব আলোচনাকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, “কোনো অস্থায়ী চুক্তির সম্ভাবনা নেই।” তবে তিনি আরও বলেন, “যদি আমেরিকার পক্ষ থেকে সদিচ্ছা থাকে, তাহলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু যদি আলোচনা হয় আমাদের অধিকার খর্ব করার জন্য, তাহলে তার ফলাফল শূন্য হবে।”
উল্লেখ্য, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। মূল ইস্যু হলো-ইরান শান্তিপূর্ণ পরমাণু প্রযুক্তি চায় নাকি গোপনে অস্ত্র নির্মাণে আগ্রহী, এই সন্দেহ ঘিরেই পশ্চিমাদের উদ্বেগ। তবে ইরান শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তাদের কর্মসূচি পুরোপুরি বেসামরিক উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে।
https://www.kaabait.com