বিদেশ : সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুক্রবার ৫০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা মে মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জলবায়ু পরিবর্তনে তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ মরুভূমির এই দেশটিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলার পর এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলো। শনিবার দুবাই থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে। এএফপি জানায়, অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে গত শুক্রবারের নামাজে অনেক মুসল্লি দুর্বলতা ও অস্থিরতা অনুভব করার কথা জানিয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত এমন একটি দেশ যেখানে তাপমাত্রা এমনিতেই অত্যন্ত বেশি থাকে। বিশ্বের অন্যতম উষ্ণতম অঞ্চলে অবস্থিত তেল সমৃদ্ধ উপসাগরীয় রাষ্ট্রের রাজধানী আবুধাবির একটি এলাকায় এই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ২৬ বছর বয়সী একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আবহাওয়া অত্যন্ত গরম ছিল, অসহনীয়।’ গরমের কারণে তিনি মসজিদে দেরিতে পৌঁছেছেন এবং বাইরে নামাজ পড়তে হয়েছে বলে জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘নামাজ শেষে আমি ঘামে ভিজে গিয়েছিলাম।’ তার মনে হচ্ছিল তিনি ‘অজ্ঞান হয়ে যাবেন’। জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র এএফপিকে জানিয়েছে, ২০০৩ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে মে মাসে ৫০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২.৭ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা সর্বোচ্চ। এটি ২০০৯ সালের সর্বোচ্চ ৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল রপ্তানিকারক ও ২০২৩ সালে কপ২৮ জলবায়ু আলোচনার আয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাত, এপ্রিল মাসে গড়ে দৈনিক সর্বোচ্চ ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিল। গত শুক্রবার এনএমসি (জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র) বাসিন্দাদের নিরাপদ থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের রোদ থেকে দূরে থাকার, প্রচুর পরিমাণে তরল পান করার, উপযুক্ত পোশাক পরার এবং সানস্ক্রিন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবারের তাপমাত্রার সঙ্গে আবুধাবির কিছু অংশে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত উচ্চ আর্দ্রতা ছিল। ২০২২ সালে গ্রিনপিসের এক গবেষণা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মধ্যপ্রাচ্য পানি ও খাদ্য ঘাটতির পাশাপাশি তীব্র তাপপ্রবাহের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ছয়টি দেশের ওপর তৈরি এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই অঞ্চলটি বিশ্বব্যাপী গড়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে, ফলে এর খাদ্য ও পানি সরবরাহ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়ে উঠেছে।
https://www.kaabait.com