সর্বশেষ :
ফুলে ফুলে ভরে উঠল জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বীর শহীদদের শ্রদ্ধায় মানুষের ঢল নিরাপত্তা শঙ্কায় ভোটের মাঠ ছাড়লেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি প্রার্থী পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের বিশ্বরেকর্ড বাংলাদেশের বিজয় দিবসে মোদি ও রাহুলের পোস্ট, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অনুপস্থিত বাংলাদেশের নাম তেজগাঁওয়ের আকাশে নজরকাড়া এয়ার শো পিরোজপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাগেরহাটে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন বিজয় দিবসে মোরেলগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সংবর্ধনা  বাগেরহাটে প্রথম মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেন জামায়াতের প্রার্থী রাহাদ।। মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবসে   জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪২ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

পার্বত্য চট্টগ্রামে নাশকতায় বন্ধ রবির অর্ধশতাধিক মোবাইল টাওয়ার

প্রতিনিধি: / ১৭৬ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল টাওয়ারের নাশকতামূলক ক্ষতির কারণে চরম নেটওয়ার্ক সংকট দেখা দিয়েছে। মোবাইল অপারেটর রবি জানিয়েছে, গত তিন মাসে দুষ্কৃতিকারীরা প্রায় ৫১টি মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে এবং ফাইবার কেবল কেটে ফেলেছে। ফলে এসব এলাকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে।

রবি জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা, যেখানে ৩২টি টাওয়ার নাশকতার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র সাতটি সচল করা সম্ভব হয়েছে, বাকিগুলো এখনও বন্ধ রয়েছে। একইভাবে রাঙ্গামাটি, লক্ষ্মীছড়ি, পানিছড়ি, দিঘিনালা, মানিকছড়ি, নানিয়ারচর, রাওজান, ফটিকছড়ি ও বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ ও ফাইবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

রবি কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য চাঁদাবাজি হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কিছু দুর্বৃত্ত তাদের নিরাপত্তাকর্মীদের অপহরণ করেছে এবং অপরিচিত নম্বর থেকে কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে টাওয়ারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে টাওয়ার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড।

রবি আরও জানায়, পার্বত্য তিন জেলায় সরকারি সংস্থা বিটিসিএলেরও অন্তত ২৬টি টাওয়ারের ফাইবার কেটে দেওয়া হয়েছে। এমনকি পুনঃসংযোগ চালুর পরপরই আবার কেটে ফেলা হচ্ছে, ফলে নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না।

মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ওষুধ সরবরাহ ও দৈনন্দিন যোগাযোগ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, “নেটওয়ার্ক না থাকায় অনেক সময় জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারছি না। বিশেষ করে রোগী বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দ্রুত সহায়তা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।”

রাঙামাটির বাসিন্দা জুনাং তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “টাওয়ারের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকায় আমাদের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আমরা চাই, সরকার দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করুক।”

এ বিষয়ে রাঙামাটির পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন জানান, রবি তাদের কাছে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ জমা দেয়নি। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, “আমরা খবর পেয়ে থানাগুলোর আশপাশে টাওয়ারগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছি।”

রবি জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ইডটকোর নিরাপত্তা দল ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বৈঠকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্যার সমাধান করার লক্ষ্যে আলোচনা করা হয়। তবে এখনো পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

রবি ও ইডটকো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে স্থানীয়রা আরও বেশি সংকটে পড়বে, ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হবে এবং মোবাইল অপারেটরগুলোর রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি গ্রাহকসেবায়ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।


এই বিভাগের আরো খবর