ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পর আগাম ডলার বেচাকেনার নীতিমালাও শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে এর প্রিমিয়াম কিছু শর্ত সাপেক্ষে ব্যাংকগুলোই নির্ধারণ করতে পারবে। তবে তা কোনো ক্রমেই সংশ্লিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার পলিসি রেটের বেশি হবে না। এ বিষয়ে গত রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আগাম ডলার বেচাকেনায় প্রিমিয়াম আরোপ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। যাতে কোনো ক্রমেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার লংঘন না ঘটে। নীতি ভঙ্গ করে আগাম ডলার লেনদেন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানাসহ ব্যাংক কোম্পানি আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব আইনের আওতায় চাকরিচ্যুতসহ বৈদেশিক মুদ্রার লাইসেন্স বাতিল করার বিধান রয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়, আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার পলিসি রেট অতিক্রম না করে এমনভাবে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবেন। যেমন ডলারের ক্ষেত্রে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল ফান্ড রেট, ইউরোর ক্ষেত্রে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান পুনঃঅর্থায়ন রেট, ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অফ ইল্যাংন্ডের ব্যাংক রেট, জাপানি ইয়েনের ক্ষেত্রে দেশটির ওভারনাইট কল রেট, চাইনিজ ইউয়ানের ক্ষেত্রে ঋণের প্রধান রেট অতিক্রমণ করা যাবে না। ওইসব মুদ্রার পলিসি রেটের সঙ্গে সমন্বয় করে আগাম ডলার বেচাকেনার সময় প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা যাবে। কোনো গ্রাহক আগাম ডলার কেনার পর তা নির্ধারিত মেয়াদের আগে পরিশোধ করতে চাইলে করতে পারবে। এতে কোনো বাধা থাকবে না। সেক্ষেত্রে প্রিমিয়ামের আরোপিত হার সমন্বয় করতে হবে। গ্রাহকের সঙ্গে আগাম ডলার বেচাকেনার সময় প্রিমিয়াম আরোপের ক্ষেত্রে চুক্তির ঠিক আগের ব্যাংকিং কার্যদিবসের পিলিসি রেট অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে তাৎক্ষনিকভাবে যেসব লেনদেন হবে তা গ্রহণ করতে হবে। এর আগে আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারে প্রিমিয়াম আরোপের বিধান ছিল। গত ১ জানুয়ারি থেকে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রেও এর প্রিমিয়াম নির্ধারণ শর্তসাপেক্ষে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো। এদিকে আরেক সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এখন থেকে আইটি খাতের রপ্তানি আয় দেশে আনার সুযোগ পাচ্ছে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপিএস) কোম্পানি। ফলে আইটি খাতের রপ্তানি আয় সহজে দেশে আনতে পিএসপিএস প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করতে পারবে। এতদিন ব্যাংকিং চ্যানেল ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এমএফএসপি) মাধ্যমে এসব আয় দেশে আনার সুযোগ ছিল।