• বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ০৮:১১

সিলেট আইনজীবী সমিতি কোন্দলই ডোবাল বিএনপিপন্থিদের

প্রতিনিধি: / ৯৬ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৫

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে আলোচনা থামছে না। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান, সুষ্ঠু ভোট হওয়ার পরও কোন্দলে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপিপন্থি প্রার্থীদের। বৃহস্পতিবার নির্বাচন শেষে শুক্রবার ভোরে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ তারেক। নির্বাচনে ২৬টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন ৬৬ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগপন্থি ৯, বিএনপিপন্থি ৭ এবং জামায়াতপন্থিরা ২টি পদে বিজয়ী হন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হওয়া নিয়ে কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নেয়। এ কারণে বিএনপিপন্থিরা নির্বাচনে চমক দেখাতে পারেনি। সভাপতি পদে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল ৭৭০ ভোট ও সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক মো. জোবায়ের বখ্ত জুবের ৩৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। অন্য পদের মধ্যে সহ-সভাপতি-১ পদে আওয়ামী লীগের জ্যোতির্ময় পুরকায়স্থ (কাঞ্চন), সহসভাপতি-২ পদে বিএনপির মো. মখলিছুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক-১ পদে আওয়ামী লীগের অহিদুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক-২ পদে বিএনপির মো. রব নেওয়াজ রানা, একই দলের সমাজবিষয়ক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সহ-সমাজবিষয়ক সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগের সৈয়দ রাব্বী হাসান তারেক, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগের হেনা বেগম নির্বাচিত হন। বিএনপির একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন, জেলা বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কয়েকজন নেতার দ্ব›েদ্ব ভরাডুবি হয়েছে। জেলা বারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এ টি এম ফয়েজ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত মশরুর চৌধুরী শওকত পরাজিত হন। এ জন্য আঙুল উঠেছে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন ও দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইদ আহমদের বিরুদ্ধে।সরকার পতনের পর পিপি হতে চেয়েছিলেন বিএনপিপন্থি অনেকে। কিন্তু সব বাদ দিয়ে দলের সিনিয়র নেতা এ টি এম ফয়েজকে দেওয়া হয় পিপির দায়িত্ব। তাঁকে পিপির দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে প্রকাশ্যে বিভক্তি দেখা দেয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে। বিএনপি ও জামায়াত নেতারা মিলে ফয়েজকে সরাতে তালা দেন তাঁর কক্ষে।কয়েক দিনের মাথায় পিপির দায়িত্ব থেকে ফয়েজকে সরানো হয়। দলের সিনিয়র নেতা আশিক উদ্দিনকে পিপির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ‘এখানে কোনো টাকা নেওয়া হয় না’ বলে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। এ নিয়ে নতুন করে দেখা দেয় বিভক্তি। বিএনপি নেতাদের দাবি, এসব কারণে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপিপন্থিদের।বিএনপি নেতাদের একটি অংশ ফয়েজসহ অন্য প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া বিএনপির সঙ্গে সম্প্রতি রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরি হওয়ায় জামায়াত কৌঁসুলি ভ‚মিকায় ছিল। যার ফল পায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সমালোচনা করে পোস্ট করছেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের আহŸায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল ফেসবুকে লেখেন, ‘তদন্ত করলে বেরিয়ে আাসবে নোংরা গ্রæপিং, সিলেট জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের আঁতাতের বিষয়টি।’ ‘কোনো দ্ব›দ্ব নেই’ জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘আমরাও বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করছি, কেন বিপর্যয় হলো।’ অভিযোগ বিষয়ে হাসান পাটোয়ারী রিপন বলেন, ‘জাতীয়তাবদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন নুরুল হক। ফোরামের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট ফয়েজকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বলেছি। কিন্তু ফয়েজ না সরায় নুরুল প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।’ কেন্দ্র থেকে নুরুল হক ও শওকতকে দিয়ে প্যানেলের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত না মেনে এ টি এম ফয়েজসহ কয়েকজন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরাজয়ের পেছনে তাঁর কোনো হাত নেই জানিয়ে রিপন বলেন, ‘বিগত সময়ে আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে আমরা ফয়েজের কক্ষে তালা দিয়েছি। আমরা মধ্যম সারির নেতা হিসেবে সিনিয়রদের কথামতো দায়িত্ব পালন করেছি।’


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com