অর্থনীতি: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করার দাবি জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সদস্য। একই সঙ্গে সংগঠনটিতে প্রশাসক বসানোরও অনুরোধ করেন তারা। গত রোববার বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে এ দাবি জানিয়ে চিঠি দেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে চিঠিতে স্বাক্ষর করেন সমন্বয়ক হিসেবে এফবিসিসিআই’র সাবেক সহ-সভাপতি আবুল কাসেম হায়দার, সদস্য গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, জাকির হোসেন, আলী জামান, জাকির হোসেন নয়ন, আবদুল হক প্রমুখ। সূত্র জানায়, ভোট ছাড়াই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে এফবিসিসিআই’র বর্তমান সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. মাহবুবুল আলম। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এফবিসিসিআইর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এফবিসিসিআইতে দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরতন্ত্র চলছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা এর থেকে মুক্তি চায়। এজন্য অনতিবিলম্বে এ পর্ষদ বাতিল করতে বাণিজ্য উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে গত ৫ আগস্টে নবগঠিত সরকারকে অভিনন্দন জানান ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া এফবিসিসিআই’র পর্ষদ বাতিল করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ১৫ বছর ধরে এফবিসিসিআই’র কার্যক্রম, ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবাখাতের স্বার্থে সার্বিকভাবে পরিচালিত হয়নি। বরং অনির্বাচিত, একদলীয় স্বৈরাচারী সরকারের তোষামোদি, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলসহ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর ছিল সংগঠনটি। রাজনৈতিক মদদপুষ্ট কিছু অসাধু, অ-ব্যবসায়ী এফবিসিসিআই’র নেতৃত্বে এসে প্রতিষ্ঠানটিকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন বাজার সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অস্বাভাবিক বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। চিঠিতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের বিদ্যমান সার্বিক পরিস্থিতিতে অনতিবিলম্বে এফবিসিসিআই’র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করতে হবে। ২০২২ সালের বাণিজ্য সংগঠন আইনের ১৮ ধারাবলে অতিদ্রæত এফবিসিসিআইতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ব্যবসা খাতকে পুনরায় গতিশীল করার অনুরোধ করছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি এফবিসিসিআই’র পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবিতে আগামীকাল বুধবার মতিঝিলে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ মানববন্ধনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহযোগিতা চেয়েও একটি আবেদন করেন তারা। আবেদনে বলা হয়, অন্তত এক হাজার ব্যবসায়ী মানববন্ধনে অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানটি সু-শৃংখলভাবে সম্পন্ন এবং যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি। গত বুধবার সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানেও এফবিসিসিআই’র পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি তোলা হয়। সেখানে কয়েকজন সাবেক সহ-সভাপতি, পরিচালক ও সদস্যরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে সরাসরি প্রতিনিধি নির্বাচনের জোর দাবি করেন। তাদের অভিযোগ, এফবিসিসিআ’ই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে, ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে না। নমিনেটেড প্রথা বাদ দিয়ে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে হবে।