ঋণখেলাপিদের তালিকা থেকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত। ফলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ আসন থেকে তার প্রার্থিতায় আর কোনো আইনগত বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এই নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মান্নার বিষয়ে হাইকোর্টের আগের আদেশ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়। এর আগে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন গত বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। সে সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছিলেন, রিট খারিজ হওয়ায় মাহমুদুর রহমান মান্না নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানান মান্নার আইনজীবীরা। চেম্বার আদালতে মান্নার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান। শুনানি শেষে আদালতের আদেশের ফলে মান্নার নির্বাচনী অযোগ্যতা আপাতত কাটল বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এই মামলার পটভূমিতে রয়েছে আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের একটি ঋণসংক্রান্ত বিষয়। গত মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা প্রতিষ্ঠানটির কাছে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে একটি কল ব্যাক নোটিশ জারি করে। নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, আফাকু কোল্ড স্টোরেজের মালিকানায় মাহমুদুর রহমান মান্নার অংশীদারিত্ব ৫০ শতাংশ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর অংশ ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর অংশীদারিত্ব ২৫ শতাংশ। নোটিশে বলা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হলেও নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক অগ্রগতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে এই নোটিশ দেওয়া হয়। চেম্বার আদালতের সাম্প্রতিক নির্দেশের ফলে ঋণখেলাপির তালিকায় মান্নার নাম থাকা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা আপাতত নিরসন হলো। এতে করে বগুড়া-২ আসনে তার নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে আইনগত কোনো বাধা থাকছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।