সর্বশেষ :
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

এনসিপির ছয় নেতাসহ ২০ জন পেলেন গানম্যান

প্রতিনিধি: / ১ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় ঝুঁকিতে থাকা ২০ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে গানম্যান দিয়েছে সরকার। তালিকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির এনসিপির ছয় নেতা, দুই শীর্ষ দৈনিকের সম্পাদকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা রয়েছেন। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, গোয়েন্দা মূল্যায়ন ও ব্যক্তিগত আবেদনের ভিত্তিতেই এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশে সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি চিহ্নিত হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা জোরদারে গানম্যান দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, অনেককে গানম্যান দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও কেউ কেউ তা নিতে রাজি হননি।

পুলিশ ও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গানম্যান পাওয়া এনসিপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনকেও নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সম্পাদকদের জন্যও গানম্যান ও বাসভবনে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ডিজিএফআই, এনএসআই ও এসবিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে। “যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের একজন অস্ত্রধারী রক্ষী দেওয়া হয়েছে। তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে,” বলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম।

এদিকে একাধিক রাজনীতিক ও সংসদ-সদস্য প্রার্থী গানম্যান ও ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের জন্য সার্বক্ষণিক গানম্যান ও বাসভবনের নিরাপত্তায় সশস্ত্র পুলিশ সদস্য চাওয়া হয়েছে। একই ধরনের আবেদন রয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহম্মেদ সেখের পক্ষ থেকেও।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পর নিরাপত্তা জোরদারের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ৪১ রাউন্ড গোলাবারুদ ও একটি খেলনা পিস্তল। মূল হোতা ফয়সাল করিম মাসুদকে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, গানম্যান দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাস্তব জটিলতা রয়েছে। অনেক আবেদনকারী শিক্ষার্থী কিংবা গণপরিবহনে চলাচল করেন, ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।


এই বিভাগের আরো খবর