স্পোর্টস: আগের দিন জাগানো সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিলেন ডেভন কনওয়ে। চমৎকার ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। সঙ্গে রাচিন রাভিন্দ্রার অপরাজিত ফিফটিতে বিশাল সংগ্রহ গড়ল নিউ জিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে শুরুটা দারুণ হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সবুজ ঘাসের উইকেটে প্রথম দিনের তুলনায় শুক্রবার ভালো বোলিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে বড় সংগ্রহই গড়েছে নিউ জিল্যান্ড। ৮ উইকেটে ৫৭৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে ১ উইকেটে ৩৩৭ রান নিয়ে খেলতে নামা স্বাগতিকরা।
জন ক্যাম্পবেল ও ব্র্যান্ডন কিংয়ের ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১১০ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ক্যারিবিয়ানরা। সিরিজে প্রথমবার শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেল তারা। এখনও ৪৬৫ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা।
৯ চারে ৭৮ বলে ৫৫ রানে খেলছেন কিং। ক্যাম্পবেল ৬০ বলে ৪৫ রান করতে মেরেছেন ৭টি চার।
নিউ জিল্যান্ডকে পাহাড়সম রান এনে দেওয়ার পথে বড় ভূমিকা রাখা কনওয়ে করেন ২২৭ রান। প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা ক্রিজে থেকে ৩৬৭ বলের ইনিংসটি সাজান তিনি ৩১ চারে।
২০২১ সালের জুনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে ঠিক ২০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কনওয়ে। যেটা ছিল টেস্টে তার প্রথম তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস। দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পেতে তার লাগল আড়াই বছর।
রাভিন্দ্রার ব্যাট থেকে আসে ২ ছক্কা ও ৬টি চারে ৭২ রান। দশ নম্বরে নেমে ২ ছক্কা ও ৩টি চারে ৩০ বলে ৩০ রান করেন এজাজ প্যাটেল।
অভিজ্ঞ পেসার কেমার রোচকে ছাড়া নতুন দিন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় এদিন মাঠেই নামতে পারেন তিনি। অসুস্থ অনুভব করছেন তাদের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শেই হোপও।
আগের দিন স্রেফ এক উইকেট নিতে পারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নতুন দিনের চতুর্থ ওভারেই ছোবল হানে প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ে; নাইটওয়াচম্যান জ্যাকব ডাফিকে কট বিহাইন্ড করেন জেডেন সিলস। এতে অবশ্য মনোযোগ হারাননি নামের পাশে ১৭৮ রান নিয়ে খেলতে কনওয়ে।
অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে জমে উঠতে থাকতে কনওয়ের জুটি। এর মাঝেই ৩১৬ বলে কাঙ্ক্ষিত দ্বিশতকে পা রাখেন কনওয়ে।
থিতু হয়ে জাস্টিন গ্রেভসের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন উইলিয়ামসন (৫ চারে ৩১)। তাতে ভাঙে ৬৯ রানের জুটি। কয়েক ওভার পর গ্রেভসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন কনওয়ে।
একবার জীবন পাওয়া ড্যারিল মিচেল পারেননি ইনিংস বড় করতে। ৫ রানের মধ্যে তাকে ও টম ব্লান্ডেলকে হারায় নিউ জিল্যান্ড।
এক প্রান্ত ধরে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন রাভিন্দ্রা। গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে দলের রান পাঁচশ পার করেন তিনি। চার বিরতির পরপরই ফিলিপস (৪টি চারে ২৯) স্লিপে ধরা পড়লে ভাঙে ৬১ রানের জুটি। তাকে ও জ্যাক ফোকসকে বিদায় করেন অ্যান্ডারসন ফিলিপ।
৯২ বলে ফিফটি করা রাভিন্দ্রাকে শেষ পর্যন্ত ফেরাতে পারেই ক্যারিবিয়ানরা। দ্রুত রান বাড়ানোর পথে হাঁটেন এজাজ। ফিলিপকে দুই ওভারে দুটি চার মারেন তিনি। পরে ক্যাভাম হজকে চার বলের মধ্যে হাঁকান দুটি ছক্কা। এরপরই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় কিউইরা।
ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভালো শুরু এনে দেন ক্যাম্পবেল ও কিং। তাদের ব্যাটে দ্রুত আসতে থাকে রান। প্রথম ১০ ওভারে ৫৩ রান তুলে ফেলে সফরকারীরা।
১৯তম ওভারে ডাফিকে চার মেরে ৬৩ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন কিং। ষষ্ঠ টেস্ট খেলতে নামা ওপেনারের এটি দ্বিতীয় ফিফটি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে টেস্টে চতুর্থ ফিফটির দুয়ারে পৌঁছে গেছেন ক্যাম্পবেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৩৭/১) ১৫৫ ওভারে ৫৭৫/৮ ডিক্লে. (কনওয়ে ২২৭, ডাফি ১৭, উইলিয়ামসন ৩১, রাভিন্দ্রা ৭২*, মিচেল ১১, ব্লান্ডেল ৪, ফিলিপস ২৯, ফোকস ১, প্যাটেল ৩০*; রোচ ১৯-৩-৬৩-১, সিলস ৩৩-৪-১০০-২, ফিলিপ ২৯-৪-১৫৪-২, গ্রেভস ২৯-৪-৮৩-২, চেইস ৪৪-১-১৫৯-১, হজ ১-০-১২-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৩ ওভারে ১১০/০ (ক্যাম্পবেল ৪৫*, কিং ৫৫*; ডাফি ৯-০-৩৭-০, ফোকস ৬-০-৩৯-০, রাই ৪-০-২৫-০, প্যাটেল ৪-০-৯-০)