ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছে ছাত্র-জনতা।
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে শুক্রবার সকাল থেকে ছাত্রজনতা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে, যার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘গোলামি না আজাদী’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’ ও ‘আমরা সবাই হাদি হব, জুগে জুগে লড়ে যাব’।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও শাহবাগে বিক্ষোভ হয়েছে। রাত ১১টার দিকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন রাতভর চললেও ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে আবারও ছাত্রজনতার উপস্থিতি বেড়ে যায়। একই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা স্লোগান দেন। তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। বিক্ষোভে এক কাতারে ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলম।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং ডাকসু নেতারা সড়কে নামছেন। তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আধিপত্যবিরোধী আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।
রাতে রাজধানীর উত্তরা, মিরপুর, ধানমন্ডি ৩২ ও ছায়ানটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। প্রথম আলো এবং দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়লে কিছু সময় ভেতরে আটকা পড়েন কর্মীরা। দমকল বাহিনীর সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়।
শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ঘেরাও করা হয়, আগুন দেওয়া হয় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বাড়িতে এবং রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগ অফিসে। সিলেট, বরিশাল ও নেত্রকোনায়ও আন্দোলনকারীরা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিচার দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওসমান হাদি। ঢাকা মেডিকেল ও এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।