ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও উদ্বেগ বাড়াল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সোমবার ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬১০ জন নতুন রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ১২ জনে এবং মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৩৮৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমলেও হাসপাতালের চাপ এখনো উল্লেখযোগ্য। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভর্তি হওয়া মোট রোগীদের মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯২ হাজার ৬১৮ জন। তবে নতুন করে রোগী ভর্তির হার থেমে নেই, যা নগর ও জেলা পর্যায়ে ডেঙ্গুর বিস্তারের চিত্রই তুলে ধরে।
তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী রাজধানীতে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ভর্তি হয়েছেন ১৭১ জন এবং ঢাকা দক্ষিণে ভর্তি হয়েছেন ১০২ জন। ঢাকা বিভাগের অন্য হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮১ জন। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামে ভর্তি হয়েছেন ১২২ জন, বরিশালে ৫২ জন, খুলনায় ৩১ জন, ময়মনসিংহে ২৬ জন, রাজশাহীতে ১৭ জন, রংপুরে ২ জন এবং সিলেটে ভর্তি হয়েছেন ৪ জন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরের শেষ ভাগে এসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আবারও বাড়তে শুরু করা উদ্বেগজনক। তাদের মতে, এডিস মশার প্রজননস্থল নষ্ট করা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কার্যকর বিকল্প নেই। একজন বিশেষজ্ঞ জানান, “শীতের শুরুতে অনেকেই ঝুঁকি কম ভেবে সতর্কতা কমিয়ে দেন, এতে আক্রান্তের হার আবার বাড়তে পারে। তাই মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা জরুরি।”
তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মারা গিয়েছিলেন ৫৭৫ জন। তার আগে ২০২৩ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ, মোট ১ হাজার ৭০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। চলতি বছরের পরিসংখ্যান এখনো তুলনামূলক কম হলেও সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও নগর ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির কারণে ঝুঁকি বহাল রয়েছে।