সর্বশেষ :
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায়  মোরেলগঞ্জে হরিসভা মন্দিরে  বিশেষ প্রার্থনা   বাগেরহাটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে জনগোষ্ঠীর অধিকার এবং আমাদের করণীয় বিষয়ক গণশুনানি অনুষ্ঠিত বাগেরহাটে শিশুদের অনলাইন যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে বিষয়ক কর্মশালা বাগেরহাটে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত পাইকগাছায় সরদার বাড়ির মেয়ে রত্নগর্ভা ডালিমের ত্যাগ, শাসন আর সাফল্যের অনন্য গল্প ফকিরহাটে ধর্ষণ মামলার আসামী যশোর থেকে গ্রেপ্তার বাগেরহাটে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত ইসির গেজেট বাতিল, বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি আয়েশা গ্রেফতার ভারতকে রাজি করিয়ে ফেরানো হতে পারে শেখ হাসিনাকে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

বিএনপির প্রচারণায় তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন এনসিপির

প্রতিনিধি: / ৩২ দেখেছেন:
পাবলিশ: বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির প্রার্থীরা প্রচারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহার করছেন। নির্বাচনী আচরণবিধির সাথে এটি সাংঘর্ষিক দাবি করে নির্বাচন কমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিক আপত্তি তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে দলটির নেতারা এই অভিযোগ উত্থাপন করেন।

সংলাপে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা বলেন যে, বর্তমান আচরণবিধি অনুযায়ী কোনো প্রার্থী কেবল নিজের ছবি, দলীয় প্রতীক এবং দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করতে পারেন। বিএনপির প্রার্থীরা যেখানে বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার করলে নিয়ম লঙ্ঘন হয় না, সেখানে তারেক রহমান কিংবা জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহার করা স্পষ্টভাবেই বিধিবহির্ভূত। তিনি বলেন, প্রার্থীদের প্রচারণায় এসব ছবি ব্যবহারের ঘটনায় ইসির সক্ষমতা ও সদিচ্ছা এখন প্রশ্নের মুখে। তার ভাষায়, নির্বাচন কমিশন যদি এনালগ বা দুর্বল অবস্থান নেয়, তাহলে আচরণবিধি বাস্তবায়ন কেবল কাগজেই থেকে যাবে।

জহিরুল ইসলাম মূসা সংলাপে আরও বলেন যে, ইতিমধ্যেই দলটি নির্বাচন কমিশনকে সংশ্লিষ্ট বিধিমালা দেখিয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিএনপির প্রচারণায় এসব ছবি নিয়মিত ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এটি বন্ধ করতে কমিশন কতটা কঠোর হতে পারে সেটাই এখন বড় পরীক্ষার বিষয়। লিফলেট, পোস্টার, বিলবোর্ড থেকে শুরু করে নানা প্রচারসামগ্রীতে তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আচরণবিধি প্রয়োগের মধ্য দিয়েই কমিশনের সক্ষমতা প্রমাণ হবে।

সংলাপে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গণভোট প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশন এখনো কোনো প্রস্তুতি দেখাতে পারেনি। দ্রুত গণভোট প্রক্রিয়া শুরু না হলে এটি বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও দলের অবস্থান তুলে ধরেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তার মতে, জোট করলেও প্রত্যেক দলকে নিজস্ব প্রতীক নিয়েই মাঠে নামতে হবে। অন্য দলের প্রতীক ধার নেওয়া বা ব্যবহার করা জনমতের সঙ্গে অসঙ্গত এবং রাজনৈতিকভাবে বিভ্রান্তিকর। তিনি বলেন, নিজের দল ও প্রতীক নিয়ে ভোটে যাওয়া রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ এবং এর মধ্যেই রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা পরিষ্কার হয়।

সংলাপে এনসিপির নেতারা বিদ্যমান আচরণবিধির বাস্তবতা, অস্পষ্টতা এবং প্রয়োগক্ষমতা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন তোলেন। জহিরুল ইসলাম মূসা বলেন, বিলবোর্ড তৈরির খরচ ও বাস্তবতা বিবেচনা ছাড়াই ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মাঠের রাজনীতির সঙ্গে যায় না। আবার মাইকের শব্দমাত্রা নির্ধারণ করলেও তা পরিমাপের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাদির ব্যবস্থা কমিশনের হাতে নেই। অস্ত্রবাজি বা শক্তিপ্রদর্শন নিয়ন্ত্রণের মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রেও ইসির সক্ষমতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

তফসিল ঘোষণার পর অভিযোগ যাচাই, তদন্ত এবং আইন প্রয়োগের প্রক্রিয়ায় যে ধীরগতি ও জটিলতা তৈরি হয়, সে বিষয়টিও তুলে ধরেন এনসিপি নেতারা। তাদের দাবি, আচরণবিধিতে যে বিধান রাখা হয়েছে তাতে শাস্তির ধরন আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদ্ধতি বা প্রশাসনিক নির্দেশনা অনেক ক্ষেত্রে অস্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার নিয়েও সংলাপে মত দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা তাসনিম জারা। তিনি প্রস্তাব করেন, মেটা ও টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও এআই-জেনারেটেড বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ঠেকাতে ইসিকে উদ্যোগী হতে হবে। এনসিপির মতে, ডিজিটাল-যুগের নির্বাচন পরিচালনায় এ ধরনের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি এখন অত্যাবশ্যক।

সংলাপের সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, যেখানে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।


এই বিভাগের আরো খবর