তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বোদরুম উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি রাবার নৌকা ডুবে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন অনিয়মিত অভিবাসী ও একজন মানব পাচারকারী ছিলেন বলে জানিয়েছে দেশটির কোস্টগার্ড। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) গভীর রাতে এজিয়ান সাগরে।
স্থানীয় গভর্নরের দপ্তর জানায়, রাত ১টার কিছু পর এক আফগান নাগরিক সাঁতরে তীরে উঠে কর্তৃপক্ষকে খবর দেন যে নৌকাটি ডুবে গেছে। ওই অভিবাসী জানান, মোট ১৮ জন যাত্রী নিয়ে রাবারের নৌকাটি যাত্রা শুরু করেছিল। পানি ঢোকার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই সেটি ডুবে যায়। পরে তিনি সাঁতরে চেলেবি দ্বীপে পৌঁছাতে সক্ষম হন, যা করতে তার ছয় ঘণ্টা লেগেছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তুরস্কের কোস্টগার্ড দ্রুত অভিযান শুরু করে। চারটি উদ্ধার নৌকা, একটি হেলিকপ্টার ও একটি বিশেষ ডাইভিং দল নিখোঁজদের সন্ধানে অংশ নেয়। তারা সমুদ্র থেকে ১৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং দুইজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
বোদরুম শহরটি গ্রিসের কোস দ্বীপ থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই পথটি ইউরোপে প্রবেশের অন্যতম বিপজ্জনক রুট হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর উত্তর আফ্রিকা, সিরিয়া ও আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশের হাজারও অভিবাসী এই রুটে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় অন্তত এক হাজার ৪০০ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। সংগঠনটি জানায়, চলমান বছরেও এজিয়ান সাগরে একাধিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে।
২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে তুরস্ক। এরপর থেকে দেশটি প্রায় ২৫ লাখেরও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সিরিয়ার নাগরিক। তবু সীমান্তপথে অভিবাসীদের মৃত্যুর মিছিল থামছে না।