বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে আয়োজিত এক মানববন্ধনে জানিয়েছেন, “‘ষড়যন্ত্রে লিপ্ত উপদেষ্টারদের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে প্রমাণসহ। যদি তারা দ্রুত সংশোধনে না আসে তাহলে আমরা জনসম্মুখে তা প্রকাশ করব।”
সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “একটি দলের লোকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনে বসিয়ে নীলনকশার নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র চলছে। এতে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমি সরকারকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আজকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই না। প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা ও যেসব ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পদে নিরপেক্ষ ও সৎ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিন।”
তিনি আরও যোগ করে বলেন, “যদি তা না হয়, তাহলে আমি বলতে পারি কোনো কোনো উপদেষ্টার ষড়যন্ত্রে যুক্তদের নাম আমাদের কাছে আছে; তাদের কল রেকর্ডও রয়েছে। তারা মিটিংয়ে কী বক্তব্য দিয়েছে, তারও তথ্য আছে। আমরা এখনই জনসমক্ষে প্রকাশ করছি না, সুযোগ ও সংশোধনের জন্য সময় দিচ্ছি। তবে সময়মতো সতর্ক না হলে নাম প্রকাশ করা হবে।”
‘নির্বাচনের সুষ্ঠু আয়োজনের জন্য সরকারকে নিরপেক্ষ হতে হবে। প্রশাসনও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনকেও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি, সেই নিরপেক্ষ প্রশাসনকে আবার দলীয়করণের জন্য একটি মহাষড়যন্ত্র চলছে’-উল্লেখ করেন জামায়াতের এ নেতা।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, “গত পরশু জনপ্রশাসনে একজন সচিবকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা আগেই সরকারকে জানিয়েছিলাম, এই পদটি নির্বাচনের আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সাধারণত সিএসপিদের ও বিভাগীয় কমিশনারদের নিয়োগ হয়। এজন্য একজন সৎ ও যোগ্য, নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিল। সরকারের কিছু উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে এখানে কোনো দলীয় বা অসৎ লোক নিযুক্ত করা হবে না। আপনারা নিশ্চিত থাকুন, এখানে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে বসানো হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কিন্তু আমরা বিস্ময়ভরে দেখছি, আমাদের সঙ্গে কথা বলার একদিন পরেই এমন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যার অতীতের দুর্নীতির ইতিহাস দীর্ঘ। তিনি একটি দলের প্রতি সম্পূর্ণভাবে অনুগত এবং বিভিন্ন সময়ে বিশেষ দলের ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। আজও আমরা দেখছি, সরকারের চার থেকে পাঁচজন উপদেষ্টা একটি বিশেষ দলের পক্ষে সব নিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এটি একটি দলীয় সরকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমি পুলিশের কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনাও করেছি। সেখানে একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে যে, প্রচণ্ড চাপ দিয়ে কোনো একটি দলের লোককে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
গণভোট এখন সবার ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত। কিন্তু কিছু পক্ষ এখানে প্যাঁচ খেলার চেষ্টা করছে। তারা বলছে, গণভোট ও জাতীয় ভোট একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি ব্যক্ত করেন।