সর্বশেষ :
বাগেরহাট প্রেসক্লাব নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা ও যাচাই বাছাই সম্পন্ন  বাগেরহাটে বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ  মোংলায় ইজিবাইকের ধাক্কায় নিহত-১, গাড়ি ও চালক আটক মোরেলগঞ্জে হত্যার হুমকীতে দিনমজুরের আত্মহত্যা? বাধালে কোটি টাকার কাঁচা-পাকা সুপারি বাণিজ্যের পেছনে অচেনা শ্রমিকদের কান্না-হাসি কপিলমুনিতে ঝুলন্ত অবস্থায় বিধবা নারীর মরদেহ উদ্ধার ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ওপর গুলির প্রতিবাদে মোরেলগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ চীনের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করলো ভারত ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাইবার হামলা ইউক্রেনের ৯০টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

পাইকগাছায় কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন

প্রতিনিধি: / ৮৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫

ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা): পাইকগাছায় কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে, লেবুর বাম্পার ফলন হলেও, কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, যা তাদের হতাশ করছে। আর বাজারে লেবুর চাহিদা কম থাকায় ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে।
লেবুর মধ্যে কাগজিলেবু তুলনামূলকভাবে ছোট বলে এর অন্য নাম হয়েছে পাতিলেবু। আবার পাত মানে ভাত খাওয়ার থালায় এর ব্যবহার রয়েছে বলেও এর নাম পাতি লেবু হতে পারে। ছোট হলেও কাগজি লেবুর যে সুঘ্রাণ তা আর কোন লেবুতে নেই। এ লেবুর গাছ খুব বড় হয় না, ডালপালা কিছুটা লতানো ও ঝোপাল, কাঁটাময়। পাতা ডিম্বাকার ও ছোট, চকচকে সবুজ। ফুলের রঙ সাদাটে। কাগজিলেবু লম্বাটে, খোসা মসৃণ ও পাতলা, সবুজ ও চকচকে। খোসায় নখের আঁচড় দিলে কাগজিলেবুর বিশেষ ঘ্রাণ পাওয়া যায়, যা অন্য কোন লেবুতে পাওয়া যায় না। প্রায় সারা বছরই গাছে ফুল ফল ধরে। তবে মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বেশি লেবু ধরে। কাগজিলেবু অম্লরসযুক্ত। ভেতরের কোষ হালকা সবুজাভ সাদা ও রসে পরিপূর্ণ থাকে। পরিণত হলে বেশি রস হয়। ভেতরে স্বল্প বীজ হয়। বর্তমানে বীজবিহীন জাতও উদ্ভাবন করা হয়েছে।
কাগজি লেবু একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ফল। এটি ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন লেবু খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজমশক্তি ভালো হয় এবং ত্বক ও দাঁত সুস্থ থাকে। প্রতিদিন লেবুর রস গরম পানিতে মিশিয়ে, ভাতের সাথে বা সালাদে যোগ করে, অথবা লেবুর শরবত বানিয়ে খেলে লেবুর রস হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। তবে, অতিরিক্ত লেবু খাওয়া এড়িয়ে যাওয়াই ভালো, কারণ এটি কিছু ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাগুজিলেবু যোগ করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছড়ানো ছিটানো ভাবে প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে কাগুজি লেবুর চাষ হয়। সব মিলিয়ে উপজেলায় ৫০ হাজারের উপরে লেবুর গাছ আছে। উপজেলার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী ইউনিয়নে আংশিক এলাকায় লেবুর বাগান রয়েছে। গদাইপুর ইউনিয়নের মটবাটী, হিতামপুর,গদাইপুর ও গোপালপুর গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে লেবুর বাগান গড়ে উঠছে। বিশেষ করে বাগান মালিকরা বাগানের বেড়া দিতে প্রয়োজনীয় বাঁশের মূল্য বেশি হওয়ায় তারা বাগানের চারপাশে সীমানা দিয়ে লেবু গাছ লাগিয়ে বাগান সুরক্ষা করছে। লেবু গাছে ছোট ছোট কাঁটা থাকায় গরু, ছাগল, ভেড়া প্রবেশ করতে পারে না। একদিকে বেড়া দেয়ার খরচ বাঁচে ও অন্যদিকে আইলে লেবু গাছ লাগিয়ে বাগান মালিকরা লাভবান হচ্ছে।
জুন ও জুলাই মাস লেবুর ভরা মৌসুম থাকে। আগস্ট মাস থেকে লেবু হলুদ হয়ে ঝরে পড়তে থাকে। এক একটি বড় লেবু গাছে ৫শ থেকে ১ হাজার লেবুর ফলন হয়। উপজেলার চেচুয়া গ্রামের লেবু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, এ বছর লেবুর ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। তারা লেবু বাগানে মালিকের কাছ থেকে প্রতিটি লেবু ৭৫ পয়সা বা এক টাকা দরে ক্রয় করে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সরবরাহ করছে। এ বছর স্থানীয় বাজরেও লেবুর চাহিদা কম। এলাকার হাট-বাজারে খুচরা ছোট লেবু ১-২ টাকা ও বড় লেবু ৩ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। গদাইপুর গ্রামের লেবু বাগান মালিক আবুল কাশেম বলেন, এ বছর লেবুর চাহিদা নেই, দামও কম। গাছের লেবু হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: একরামুল হোসেন জানান, পাইকগাছা উপকূলের এ এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় ৩/৪টি ইউনিয়নে কাগুজিলেবু আবাদ হয়। কাগজিলেবু লাভ জনক হওয়ায় ক্ষেতের আইলের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভিত্তিকে লেবু বাগান তৈরী শুরু হয়েছে। লেবু বাগান লাগাতে তেমন কোন খরচ হয় না, সামান্য পরিচর্যা করলে লেবু বাগান থেকে প্রচুর ফলন পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস থেকে লেবু বাগান তৈরী করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


এই বিভাগের আরো খবর