বিদেশ : ভারতের তামিলনাড়ুতে জনপ্রিয় অভিনেতা থেকে রাজনীতিতে আসা থালাপতি বিজয়ের এক সমাবেশে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৯ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ১৭ জন ও ৯ টি শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৬ জন। গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের কারুর জেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশস্থলে হঠাৎ ভিড়ের চাপ তৈরি হলে অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সেই সময়ই পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পুলিশ জানায়, বিজয়ের এই কর্মসূচি আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে তিনি নির্ধারিত সময়ের সাত ঘণ্টা পর তিনি মঞ্চে পৌঁছান। এরই মধ্যে বিপুল জনসমাগম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, সমাবেশস্থলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা, প্রচণ্ড গরম ও খাবারুপানির অভাবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভিড় ক্রমে মঞ্চের দিকে ধেয়ে আসছিল। এ সময় দম বন্ধ হয়ে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বক্তৃতা থামিয়ে দেন বিজয়। ভিড়ের দিকে পানি ছুড়ে দিতে দেখা যায় তাকে। পরে সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যের পুলিশপ্রধান জি ভেঙ্কাটরামান জানান, শুরুতে এই সমাবেশের জন্য ছোট জায়গায় অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, যা নাকচ করা হয়। পুলিশের অনুমতি ছিল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত, কিন্তু বিজয় পৌঁছান সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন রাতেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। পরে এঙ্ েদেওয়া বার্তায় নিহতদের পরিবারপ্রতি ১০ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ১ লাখ রুপি অনুদানের ঘোষণা দেন তিনি। একই সঙ্গে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের কথাও জানান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক শোকবার্তায় এ ঘটনাকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ উল্লেখ করেন। অভিনেতাুরাজনীতিক বিজয় প্রথমে কোনো মন্তব্য না করলেও চেন্নাই পৌঁছে সামাজিক মাধ্যম এঙ্-এ লিখেছেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। প্রাণ হারানো পরিবারগুলোর শোক আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’ পরে নিজের পক্ষ থেকেও নিহতদের পরিবারপ্রতি ২০ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ২ লাখ রুপি আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন তিনি। বিজয় বলেন, ‘এই অর্থ কোনোভাবেই এমন ক্ষতি পূরণ করতে পারে না। তবু পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি আপনাদের পাশে আছি।’