আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন রাগাসা শক্তিশালী বাতাস এবং মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে আঘাত হেনেছে হংকং ও তাইওয়ানে। ঘূর্ণিঝড়টির তাণ্ডবে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে তাইওয়ানে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। তাইওয়ানের পূর্ব হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে একটি ব্যারিয়ার হ্রদ উপচে গিয়ে একটি শহর প্লাবিত হয় বলে জানিয়েছে দেশটির ফায়ার ডিপার্টমেন্ট। সোমবার থেকে তাইওয়ান রাগাসার প্রান্তীয় অংশের প্রভাবে অবিরাম বৃষ্টির মুখে রয়েছে। হংকংয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে শহরের পূর্ব ও দক্ষিণ উপকূলে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে, ডুবে যায় রাস্তাঘাট ও আবাসিক এলাকার সামনের অংশ। সাউথ আইল্যান্ডের ফুলারটন হোটেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে-সমুদ্রের ঢেউ কাঁচের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢ়ুকে পড়ে, প্লাবিত হয় পুরো ফ্লোর। হংকংয়ের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) ছুঁয়েছে। শহর থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে রাগাসা, যা আগামী কয়েক ঘণ্টা সুপার টাইফুন হিসেবেই বজায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি গুয়াংডং প্রদেশের উপকূলে গতকাল দুপুর নাগাদ আঘাত হানতে পারে। এ প্রদেশে প্রায় ১২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করে। ইতোমধ্যে গুয়াংডংয়ে ৭ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল, রেল ও বিমান চলাচল। এমন পরিস্থিতিতে হংকং সরকার গতকাল ভোরে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত ১০ জারি করে। সতর্ক সংকেতের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবহন বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বাসিন্দারা আগেই দোকানপাট থেকে পণ্য মজুত করে ফেলেছেন। অনেকে কাঁচ ভেঙে গেলে আঘাত কমানোর জন্য জানালায় টেপ লাগিয়েছেন। সরকার জানিয়েছে, ৪৯টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৭২৭ জন আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে চীনেও এই সুপার টাইফুনটি আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিবেচনায় চীনের সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষ এ বছরের প্রথম ‘লাল সতর্কতা’ জারি করেছে, যেখানে ঢেউয়ের উচ্চতা ২.৮ মিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। রাগাসার আঘাতে আক্রান্ত হতে পারে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল যেমন- বৃহত্তম শহর গুয়াংডং, শেনজেন, ফোশান এবং ডংগুয়ানে প্রায় ৫ কোটি লোক বাস করে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার কয়েক হাজার তাঁবু, ভাঁজ করা বিছানা, জরুরি আলোর সরঞ্জাম এবং অন্যান্য উদ্ধার সরঞ্জাম প্রেরণ করেছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়।