সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৪ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সিরিয়ায় আসাদের আমলের ইউরেনিয়াম শনাক্ত করেছে আইএইএ

প্রতিনিধি: / ৬৪ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিদেশ : জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থা জানিয়েছে, তাদের পরিদর্শকরা সিরিয়ার একটি স্থানে ইউরেনিয়ামের কণার সন্ধান পেয়েছেন, যা একসময় সাবেক বাশার আল-আসাদের সরকারের গোপন পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আলজাজিরা গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। গত বছর পরিদর্শকরা প্রত্যন্ত মরুভূমি অঞ্চল দেইর আল-জোরের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে অভিযোগ থাকা ‘তিনটি স্থানে’ যান এবং পরিবেশগত নমুনা সংগ্রহ করেন। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মুখপাত্র ফ্রেডরিক ডাহল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনটি স্থানের একটির নমুনায় মানবসৃষ্ট প্রাকৃতিক ইউরেনিয়াম কণার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পাওয়া গেছে। এ কণাগুলোর কিছু ইউরেনিয়াম আকরিক ঘনত্বকে ইউরেনিয়াম অঙ্াইডে রূপান্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ এটি সাধারণত পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি সোমবার সংস্থার পরিচালনা পর্ষদকে সিরিয়াসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এসব অনুসন্ধানের কথা জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সিরীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এমন ইউরেনিয়াম কণার উপস্থিতি ব্যাখ্যা করার মতো কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।’ আইএইএ মঙ্গলবার সিরিয়াকে আহ্বান জানায়, দেইর আল-জোরে গোপনে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে যেন তারা সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করে। তবে সিরিয়া বারবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। দেইর আল-জোরের এই স্থানের বিষয়টি জনসমক্ষে আসে কেবল ২০০৭ সালে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর, যখন মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র ইসরায়েল স্থাপনাটি ধ্বংস করে দেয়, যদিও তাদের নিজস্ব কর্মসূচি কখনো ঘোষণা করা হয়নি। পরে সিরিয়া ওই স্থান সমতল করে ফেলে। তারা আইএইএর প্রশ্নের পূর্ণ জবাবও দেয়নি। আইএইএর একটি দল গত বছর কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যায়, তখন বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় ছিলেন। গত ডিসেম্বরে রাজধানী দামেস্কে বিদ্রোহীরা আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার সংস্থাটির সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয় এবং পুনরায় পরিদর্শকদের ওই স্থানে প্রবেশের অনুমতি দেয়, যেখানে ইউরেনিয়ামের কণা পাওয়া গিয়েছিল। তারা সেখানে আরো নমুনা সংগ্রহ করে। মুখপাত্র ডাহল মঙ্গলবার বলেন, ‘ওই স্থানে সংগৃহীত সব পরিবেশগত নমুনার ফলাফল ও পরিকল্পিত পরিদর্শন থেকে পাওয়া তথ্য আমরা মূল্যায়ন করব এবং প্রয়োজনে ফলো-আপ কার্যক্রম গ্রহণ করা হতে পারে।’ এদিকে গত জুনে দামেস্ক সফরের সময় অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেছিলেন, শারা ভবিষ্যতে সিরিয়ার জন্য পারমাণবিক শক্তি অর্জনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো পরিদর্শকদের ওই স্থানে প্রবেশাধিকার দিয়েছে সিরিয়া, যাতে আরো নমুনা সংগ্রহ করা যায়। ওই অঞ্চলের আরো কয়েকটি দেশ কোনো না কোনোভাবে পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নে এগোচ্ছে। গ্রোসি বলেন, সিরিয়া সম্ভবত ক্ষুদ্র মডুলার চুল্লি বিবেচনা করছে, যা প্রচলিত বৃহৎ চুল্লির তুলনায় সস্তা ও সহজে স্থাপনযোগ্য। তিনি আরো বলেন, গৃহযুদ্ধে ১৪ বছর ধরে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিরিয়ার স্বাস্থ্যব্যবস্থায় রেডিওথেরাপি, পারমাণবিক চিকিৎসা ও অনকোলজি অবকাঠামো পুনর্গঠনে আইএইএ প্রস্তুত রয়েছে।


এই বিভাগের আরো খবর