ডেঙ্গুর প্রকোপ কমার কোনো লক্ষণ নেই। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৪৭৩ জন রোগীকে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মারা যাওয়া তিনজনই পুরুষ। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৩২, ৪৫ ও ৪৮ বছর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে, একজন বেসরকারি মডার্ন হাসপাতালে এবং আরেকজন গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
এ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২৫ জনে। এর মধ্যে জুলাই মাসেই সর্বোচ্চ ৪১ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে মারা গেছেন ৩৯ জন, জুনে ১৯ জন, জানুয়ারিতে ১০ জন, এপ্রিলে সাতজন, মে মাসে তিনজন এবং ফেব্রুয়ারিতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। সেপ্টেম্বরের প্রথম দুই দিনে মৃত্যু হয়েছে আরও তিনজনের।
একই সময়ে ভর্তি হওয়া ৪৭৩ জন রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১১৩ জন, চট্টগ্রামে ৮১ জন, ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ৭৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন, রংপুর বিভাগে একজন এবং সিলেট বিভাগে দুজন রয়েছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন এক হাজার ৫৬৩ জন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫২২ জন এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৪১ জন। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৪৯১ জন রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৩২ হাজার ৫০১ জন। এদের মধ্যে ৫৯ দশমিক সাত শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক তিন শতাংশ নারী। শুধু জুলাই মাসেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের পরিসংখ্যান রাখা শুরু হয় ২০০০ সালে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়—সে বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিন লাখ ২১ হাজারের বেশি রোগী এবং মৃত্যুবরণ করেন এক হাজার ৭০৫ জন।