সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৪ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

মাইক্রোসফট ইসরায়েলকে সহায়তা করছে, প্রতিবাদ করায় বরখাস্ত ৪ কর্মী

প্রতিনিধি: / ১১৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫

বিদেশ : ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কের প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট চার কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে। ‘নো অ্যাজিউর ফর অ্যাপার্থেইড’ নামের একটি প্রতিবাদী গোষ্ঠীর দাবি, ফোনের ভয়েসমেইলের মাধ্যমে অ্যানা হ্যাটল ও রিকি ফামেলিকে জানানো হয় যে তাদের চাকরি চলে গেছে। সংগঠনটি জানায়, একই কারণে আরও দুই কর্মী—নিসরিন জারাদাত ও জুলিয়াস শ্যানকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা সমপ্রতি মাইক্রোসফটের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবাদী তাবু স্থাপনকারীদের মধ্যে ছিলেন। চলতি সপ্তাহে হ্যাটল ও ফামেলি সাতজন বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথের অফিসে অবস্থান ধর্মঘট করেন। এ ঘটনায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ওই সাতজনের মধ্যে পাঁচজন মাইক্রোসফটের সাবেক কর্মী ও বহিরাগত ছিলেন। মাইক্রোসফট এক বিবৃতিতে জানায়, কোম্পানির নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামপ্রতিক অনসাইট বিক্ষোভে ‘গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি’ তৈরি হয়েছিল। কোম্পানির প্রেসিডেন্ট স্মিথ বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রে সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করি, যতক্ষণ তা আইনসিদ্ধভাবে করা হয়।’ প্রতিবাদী গোষ্ঠীর দাবি, মাইক্রোসফট যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এক বিবৃতিতে হ্যাটল বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি কারণ মাইক্রোসফট ইসরায়েলকে গণহত্যা চালাতে সহায়তা করছে এবং নিজ কর্মীদের প্রতারণা করছে এই বাস্তবতা আড়াল করে।’ এদিকে, দ্য গার্ডিয়ান, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি প্রকাশনা ‘+৯৭২’ ম্যাগাজিন ও হিব্রু ভাষার মিডিয়া লোকাল কলের যৌথ অনুসন্ধানে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা মাইক্রোসফটের অ্যাজিউর ক্লাউড সেবা ব্যবহার করে পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের ফোনকলের তথ্য সংরক্ষণ করছে এবং নজরদারি চালাচ্ছে। জবাবে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইন প্রতিষ্ঠান কভিংটন অ্যান্ড বার্লিং এলএলপি দিয়ে পর্যালোচনা করানো হচ্ছে। এটি প্রথম নয়—এর আগেও মাইক্রোসফটের বেশ কয়েকজন কর্মী প্রতিষ্ঠানটির ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের প্রতিবাদ করেছিলেন। চলতি বছরের এপ্রিলে কোম্পানির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিভাগের প্রধান মোস্তফা সুলেমানের বক্তব্য চলাকালে এক কর্মীর প্রতিবাদের পর অনুষ্ঠানটি বাধাগ্রস্ত হয়। পরে ওই কর্মীসহ আরেকজনকেও চাকরিচ্যুত করা হয়। গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় এবং ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাঙ্গন এ ধরনের প্রতিবাদের মুখে পড়ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে ক্ষুধার্ত শিশু ও সাধারণ মানুষের মর্মান্তিক ছবি আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫০ জনের মতো জিম্মি হন। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যেখানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যানুসারে, গাজার অধিকাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠলেও দেশটি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।


এই বিভাগের আরো খবর