সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২৬ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

কিয়েভে রুশ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩ শিশুসহ নিহত ১৪

প্রতিনিধি: / ১১৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৫

বিদেশ : কিয়েভে গত রাতে রাশিয়ার তীব্র বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিন শিশুসহ ১৪ জন নিহত এবং আরো বহু মানুষ আহত হয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো জানান, রাজধানীর বিভিন্ন জেলায় ২০টিরও বেশি স্থানে হামলা হয়েছে। নিহতদের অনেকেই একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবনে ছিল, যা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ক্রেমলিন ‘আলোচনার টেবিলের বদলে ব্যালিস্টিক মিসাইল বেছে নিয়েছে’। তিনি রাশিয়ার ওপর নতুন ও কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেন। ইউক্রেনীয় সেনারা জানিয়েছে, রাশিয়া প্রায় ৬০০ ড্রোন ও ৩০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এটি চলতি মাসে রাজধানীতে সবচেয়ে বড় হামলা। কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, এদিনের রুশ ড্রোন হামলায় জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইউক্রেনের এক লাখেরও বেশি বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ ছাড়া সর্বশেষ হামলায় মধ্যাঞ্চলীয় ভিনিৎসিয়ায় আরো ৬০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিমুর তকাচেঙ্কো আরো বলেন, নিহত শিশুদের বয়স ছিল ২, ১৪ ও ১৭ বছর। সর্বশেষ হামলায় অন্তত পাঁচ শিশু আহত হয়েছে, যেগুলো সাধারণ আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে। অনেক ভবন আগুনে পুড়ে গেছে, যার মধ্যে একটি কিন্ডারগার্টেনও রয়েছে। এ ছাড়া কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানান, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দার্নিৎসকি জেলায় আংশিকভাবে ধসে পড়া একটি পাঁচতলা ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। ভবনটিতে ১২০ জন বাস করত। এদিকে কিয়েভে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সদর দপ্তরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কোস্টা বলেছেন, সর্বশেষ রুশ হামলায় তিনি ‘ভীতসন্ত্রস্ত’। একই ব্লকে অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিলের ভবনটিও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের সাড়ে তিন বছর পরও মাঠের লড়াইয়ের অবসানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের শহর ও জনগোষ্ঠীর ওপর এই হামলা হলো তাদের প্রতি ক্রেমলিনের সরাসরি জবাব, যারা মাসের পর মাস ‘যুদ্ধবিরতি ও প্রকৃত কূটনীতি’র আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, ‘রাশিয়াকে অবশ্যই অবিলম্বে বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে হবে এবং ন্যায্য ও টেকসই শান্তির জন্য আলোচনায় যোগ দিতে হবে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে যুদ্ধের ইতি টানতে একটি সম্মেলনের আয়োজনের আশা করেছিলেন, তবে এ প্রচেষ্টা এখনো ব্যর্থ। তিনি প্রথমে পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় সাক্ষাৎ করেন, এরপর জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এ পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন, তবে ক্রেমলিন পুতিন-জেলেনস্কি সম্মেলনের সম্ভাবনাকে খাটো করে দেখিয়েছে। ইউক্রেন ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে এমন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে কাজ করছে, যা শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করবে। তবে রাশিয়া বলছে, ইউরোপীয় সেনাদের উপস্থিতি তারা মেনে নেবে না এবং মস্কোর অংশগ্রহণ ছাড়া এ নিয়ে আলোচনা করা ‘অচল রাস্তা’। জেলেনস্কি মঙ্গলবার ব্রিটেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল স্যার টনি রাডাকিনের সঙ্গে কিয়েভে সাক্ষাৎ করেন, যেখানে তারা যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেন। অন্যদিকে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, তিনি এ সপ্তাহে নিউইয়র্কে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি ফঙ্ নিউজকে বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন রুশদের সঙ্গে কথা বলি।’


এই বিভাগের আরো খবর