শিব্বির আহমেদ, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি রাস্তার অভাবে শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩ হাজার মানুষের দুর্ভোগ এখন
চরমে। ৪ যুগেও গ্রামটিতে উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার প্রতিশ্রুতি
দিয়েও ভোট চলে গেলে আর খবর থাকে না। স্থানীয়দের দাবি দেড় কিলোমিটার ইটসোলিং রাস্তা
নির্মাণের।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের অজোপাড়া গ্রামে ভাষান্ডা
গ্রাম। এ গ্রামটিতে এক হাজার পরিবারের প্রায় ৩ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের দুই প্রান্তে ১৭৪
নং দক্ষিণ সুতালড়ী শাহজানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৭২ নং ভাষান্ডা সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়, মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা, ৩টি জামে মসজিদ সহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা। প্রায় ৪০
বছর ধরে এ গ্রামের মানুষ কাঁদা, হাঁটু-পানি ভেঙ্গে যাতায়েত করছেন। এমনকি খাবার পানি সংগ্রহ
করতে নারীদের মাইলের পর মাইল কাঁদা পানি ভেঙ্গে যাতায়েত করতে হচ্ছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে একাধিক জনপ্রতিনিধিরা পরিবর্তন হলেও। তাদের
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এ গ্রামটিতে। বর্ষা মৌসুমে স্কুল শিক্ষার্থী,
শিশু বৃদ্ধরা চলাচলে অভাবনীয় দুর্ভোগে পড়তে হয়। ভেঙ্গে যাওয়া ৪/৫টি স্থানে স্থানীয়দের সহযোগীতায়
দেওয়া হয়েছে গাছের সাঁকো। সে সাঁকো থেকে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা পার হয়ে যাচ্ছেন
উপজেলা শহরসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শাহজানিয়া স্কুল সংলগ্ন কাঠের পুল থেকে ভাষান্ডা গাজিকালু
মসজিদ অভিমুখি দেড় কিলোমিটার আধা পাকা রাস্তা নির্মাণ করার দাবি তুলে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে
স্থানীয় বাসিন্দারা। জনগুরুত্বপূর্ন চলাচলের ঘনবসতি এ গ্রামটি থেকে প্রতিনিয়ত ৩ হাজার মানুষ
চলাচল করে এ পথ থেকে। এমনকি সিমান্তবর্তী নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের একটি অংশের মানুষের চলাচল
করতে হচ্ছে।
কথা ওই গ্রামের বাসিন্দা হাসিনা বেগম, মহিদুল হাওলাদার, শিক্ষক হাফেজ মো. রাসেল হাওলাদার,
নূরুজ্জামান শেখসহ একাধিক পথচারিরা বলেন, এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়? ছবি তুলে আর কি হবে।
অনেক বছর ধরে শুনে আসছি রাস্তা হবে? কিন্তু রাস্তা হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে চলাচলে আমাদের
সিমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়।
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মো. সজিব হাওলাদার, রিয়াজুল হাওলাদার, শিশু শিক্ষার্থী রাফি, নয়ন ইসলাম বলেন,
স্কুলে আশার সময় হলেই দুশ্চিন্তায় পড়ি। অভিভাবকরা অনেক সময় সাথে এগিয়ে দিতে আসে না। সামান্য
বৃষ্টি হলে গাছের ওপর থেকে পার হতে গিয়ে সিলিপ কেটে বই খাতা নিয়ে অনেক সময় খাদে পড়ে যাওয়া
লাগে। আমরা একটি পাকা রাস্তা চাই। তাহলে আর কষ্ট থাকবে না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. গাউছুল হক হাওলাদার বলেন, ভাষান্ডা গ্রামের মানুষের
চলাচলে সমস্যা দেড় কিলোমিটার একটি রাস্তা। এ রাস্তাটি নির্মাণ হলে ৩/৪ হাজার মানুষের চলাচলে আর
দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। গ্রামবাসীদের গণস্বাক্ষরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর নতুন
রাস্ত্ধাসঢ়; নির্মাণের আবেদন করা হয়েছে।
এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ বলেন, এ উপজেলায় গ্রামীণ
অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এলজিইডি দপ্তর ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উদ্যোগে রাস্তাঘাট
নির্মাণের একাধিক কাজ চলমান রয়েছে। তবে, ভাষান্ডা গ্রামের নতুন রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে লিখিত
আবেদনটি দেখেনি। হাতে পেলে অবশ্যই সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা
থাকবে।