পবিত্র কুরআন হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য এক পরিপূর্ণ হিদায়াত। এতে রয়েছে এমন স্পষ্ট আয়াতসমূহ, যা মানুষের অন্তরকে আলোকিত করে, চিন্তা-চেতনাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু মানুষ এই আয়াতসমূহ শুনলে কেবল বিরক্তই হয় না, বরং আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রকাশ করে। কুরআনের এই বাস্তব চিত্র আল্লাহতায়ালা সুরা আল-হাজ্জ্ব এর ৭২ নম্বর আয়াতে তুলে ধরেছেন-
وَاِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ تَعۡرِفُ فِیۡ وُجُوۡہِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوا الۡمُنۡکَرَ ؕ یَکَادُوۡنَ یَسۡطُوۡنَ بِالَّذِیۡنَ یَتۡلُوۡنَ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا ؕ قُلۡ اَفَاُنَبِّئُکُمۡ بِشَرٍّ مِّنۡ ذٰلِکُمۡ ؕ اَلنَّارُ ؕ وَعَدَہَا اللّٰہُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ وَبِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ
অর্থ: তাদেরকে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পড়ে শোনানো হয়, তখন তুমি কাফেরদের চেহারায় বিতৃষ্ণা ভাব দেখতে পাও। যেন তারা, যারা আমার আয়াতসমূহ পড়ে শোনায়, তাদের উপর আক্রমণ চালাবে। বলো, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে আরও নিকৃষ্ট জিনিস সম্পর্কে অবহিত করব? তা হল জাহান্নামের আগুন। আল্লাহ কাফেরদেরকে তারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তা কতই না নিকৃষ্ট স্থান!
এই আয়াতে আল্লাহ স্পষ্টভাবে কাফেরদের মনের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তারা মুখে না বললেও তাদের চেহারায় বিরক্তি, রাগ এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রকাশ পায়। তারা যেন কুরআন তিলাওয়াতকারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়।
এর পর মহান আল্লাহ বলেন, এদের কি আরও ভয়াবহ বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দিব? হ্যাঁ, তা হচ্ছে জাহান্নামের আগুন। এই আগুন কাফেরদের জন্য নির্ধারিত – এক ভয়াবহ গন্তব্য, এক চরম শাস্তির স্থান।
আয়াতের শেষাংশে ‘وَبِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ’ দ্বারা জাহান্নামের অপমানজনক, ভয়ানক ও চূড়ান্ত খারাপ পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এটা এমন একটি স্থান যেখানে আল্লাহর আয়াত অস্বীকারকারী, অহংকারী ও বিদ্বেষপরায়ণ মানুষদের চিরস্থায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।
আল্লাহর আয়াত শুধুমাত্র শ্রবণ করার জন্য নয়, বরং তা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে জীবনে বাস্তবায়নের জন্য নাজিল হয়েছে। যারা এসব আয়াতের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে, আক্রমণাত্মক আচরণ করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি। আমাদের উচিত এই আয়াত থেকে শিক্ষা নেওয়া, আল্লাহর বাণীর প্রতি বিনয়ী হওয়া এবং নিজেদের জীবনে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা। কেননা, সফলতা সেই ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহর বাণীকে গ্রহণ করে, ভালোবাসে ও তা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে।