বিদেশ : মিয়ানমারের জান্তা সরকার জানিয়েছে, তারা ৯৩ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সামরিক চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। গত মাসে জাতিসংঘ থেকে এ সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার (১৪ জুলাই) এ তথ্য জানানো হবে। প্রতিবেদন অনুসারে, জান্তা সরকার এবং তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে ৪০০ জনেরও বেশি নাবালককে নিয়োগের অভিযোগ আনা হয়। তাদের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মায়ানমার সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিবৃতিতে জান্তা সরকারের মুখপত্র বলেছে, তারা গত বছর একটি যাচাইকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছিল। এর মধ্য দিয়ে ৯৩ জন নাবালককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং এর সঙ্গে যুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো গত বছর ৪৬৭ জন ছেলে এবং ১৫ জন মেয়েকে নিয়োগ করেছে। এদের মধ্যে ৩৭০ জনেরও বেশি নাবালক যুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জান্তা-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোও শিশুদের নিয়োগ করেছে। যদিও তাদের সংখ্যা জান্তা বাহিনীর তুলনায় অনেক কম ছিল। ২০২১ সালে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। অভ্যুত্থানের পর ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরবর্তীতে দেশব্যাপী সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত জাতিগত প্রতিরোধ বাহিনী এবং নতুন সশস্ত্র সংগঠনগুলো মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। জান্তা সরকারকে মূলত দেশের কেন্দ্রীয় সমভূমিতে ঘিরে রাখা হয়েছে। ২০২৪ সালে জান্তা সরকার বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা আইন কার্যকর করে। কয়েক মাসের নিরলস লড়াইয়ের পর শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য তরুণদের নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যার মধ্যে ২০২৪ সালে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা ছিল মোট জনসংখ্যার ৩৩% এরও বেশি। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল রাখাইন রাজ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা এবং দুইজন রোহিঙ্গা যোদ্ধার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুরাও সম্মুখ সারিতে লড়াই করছে। রয়টার্স বলছে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত দশ লাকেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রয়েছে। শিবিরগুলোতে গত বছর যোদ্ধা নিয়োগ এবং সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছিল।